শীত হোক বা গরম চা ছাড়া কোনোভাবেই বাঙালির দিন শুরু হয় না। আবার বিস্কুট ছাড়া চা যেন অসম্পূর্ণ। তবে শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে নয়, শিশু থেকে বয়স্ক প্রত্যেক ব্যক্তিরই বিস্কুট অসম্ভব পছন্দের একটি খাদ্যবস্তু। যার ফলে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে বিস্কুটের চাহিদা ক্রমাগত হারে বাড়ছে, এমনকি শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয় সমগ্র ভারতবর্ষের জুড়েও বিস্কুটের চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী। আর আপনি চাইলেই বাড়িতে বিস্কুট তৈরি করে নিজস্ব বিস্কুটের ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
বিস্কুটের ব্যবসা কিভাবে শুরু করবেন?
বিস্কুট তৈরীর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় দ্রব্য:- বিস্কুটের ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমেই বিস্কুট তৈরির উপাদান এবং বিস্কুট তৈরির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় মেশিনগুলি সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। বিস্কুট তৈরি করার ক্ষেত্রে গমের আটা, চিনি, ঘি, ডালডা, দুধ, লবণ, কিসমিস, কাজুবাদাম, বাদাম, বেকিং পাউডার, ফুড কালার সহ আরও নানারকম দ্রব্য প্রয়োজন হবে। অন্যদিকে বিস্কুট তৈরি করার ক্ষেত্রে আপনার মিক্সার মেশিন, ড্রপিং মেশিন, ওভেন, বিস্কুট প্যাকিং করার মেশিন প্রয়োজন হবে। বিস্কুট তৈরির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় এই সমস্ত দ্রব্য এবং মেশিনগুলি আপনি আপনার বাড়ির নিকটবর্তী লোকাল মার্কেট থেকে কিংবা আপনার এলাকার নামজাদা যেকোনো মার্কেট থেকে কিনে নিতে পারবেন। এছাড়াও আপনি চাইলে বাড়িতে বসে অনলাইনের মাধ্যমে এই সমস্ত দ্রব্যগুলো কিনে নিতে পারবেন। তবে এই সমস্ত দ্রব্যগুলো কিনলেই তো হলো না, বিস্কুট তৈরি করার ক্ষেত্রে আপনাকে ট্রেনিং নিতে হবে এবং সুস্বাদু বিস্কুট তৈরি করার প্রক্রিয়া শিখতে হবে।
বিস্কুট তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা নির্বাচন:- বিস্কুট তৈরি করার ক্ষেত্রে আপনার ১০০০ বর্গ মিটার জায়গার প্রয়োজন হবে। আপনার বাড়িতে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ ফাঁকা জায়গা থাকে তবে আপনি আপনার বাড়িতেই বিস্কুট তৈরি করতে পারেন। এছাড়াও আপনি আপনার বাড়ির নিকটবর্তী মার্কেটে ১০০০ বর্গ মিটারের ঘর ভাড়া নিয়ে নিজস্ব বিস্কুটের ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। তবে আপনি চাইলে নিজস্ব ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে ১০০০ বর্গ মিটারের একটি ঘর তৈরিও করে নিতে পারেন।
আরও পড়ুন:- ভোটার কার্ড সংশোধন করবেন কিভাবে। জেনে নিন বিস্তারিত পদ্ধতি।
বিস্কুট বাজারজাতকরণ:- বিস্কুটের ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে আপনাকে জানতে হবে আপনার নিকটবর্তী দোকানগুলিতে কোন বিস্কুটের চাহিদা কি রকম, গ্রাহকরা কোন ধরনের বিস্কুটগুলি বেশি পছন্দ করছেন। এরপর গ্রাহকরা যে ধরনের বিস্কুটগুলি পছন্দ করছেন সেই রকম নিত্যনতুন স্বাদের বিস্কুট তৈরি করে মার্কেটে বিক্রি করতে পারলেই আপনার বিস্কুটের চাহিদা যথেষ্ট বাড়বে। বাজারে যেহেতু আগে থেকেই নানান ধরনের বিস্কুট উপস্থিত রয়েছে সুতরাং আপনাকে নতুন স্বাদের নতুন ধরনের বিস্কুট আনার চেষ্টা করতে হবে। এছাড়াও বিস্কুটের প্রচারের জন্য আপনি পোস্টার এবং হোডিং -এর ব্যবস্থা করতে পারেন, এর মাধ্যমে সাধারণ জনগণ আপনার বিস্কুট সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং মার্কেটে আপনার কোম্পানীর বিস্কুটের চাহিদা বাড়বে। তবে বিস্কুট বাজারজাত করার সময় ভালো করে বিস্কুটের প্যাকেজিং চেক করে নেবেন। কারণ প্যাকেজিং -এ কোনোরকম সমস্যা থাকতে বিস্কুট নরম হয়ে যাবে এবং গুণমান নষ্ট হয়ে যাবে।
প্রয়োজনীয় লাইসেন্স:- বিস্কুটের ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে আপনার প্রথমে ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন হতে চলেছে। এছাড়াও বিস্কুটের ব্যবসা শুরু করার জন্য FSSAI পারমিট প্রয়োজন হবে।
প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ:- বিস্কুট তৈরির কাজের নূন্যতম ২০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ প্রয়োজন হতে পারে। তবে আপনি যদি বেশ বড় করে ব্যবসাটি শুরু করতে চান তাহলে ৩ লক্ষ টাকা থেকে ৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে।
লাভের পরিমাণ:- গ্রাহকদের পছন্দ অনুসারে বিস্কুট তৈরি করতে পারলে এবং সঠিকভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারলে আপনি এই বিস্কুটের ব্যবসা থেকে এক মাসে ২৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে প্রায় ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করে নিতে পারবেন।