পশ্চিমবঙ্গের জেলা বিভাজন নিয়ে ফের এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আনা হলো। বিভিন্ন সূত্রে প্রকাশিত তথ্য মারফত জানা গিয়েছে, আগামী দিনে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের জেলার সংখ্যা ২৩ থেকে বেড়ে আরো বেশি হতে পারে। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের তরফে কার্যকরী জেলা বিভাজন নিয়ে সমগ্র রাজ্যে জনসাধারণের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার চর্চার সূত্রপাত ঘটেছে। যার জেরে আজ আমরা রাজ্য সরকারের তরফে কার্যকরী জেলা বিভাজন এবং আগামী দিনে নতুন করে কোন কোন জেলাকে বিভাজিত করা হতে পারে তা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি।
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের তরকে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে যে, ২০২২ সালের ১লা আগস্ট নতুন করে সাতটি জেলার নাম ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ অনুসারে, সুন্দরবন, ইছামতি, রানাঘাট, বিষ্ণুপুর, জঙ্গিপুর, বহরমপুর এবং বসিরহাট এই সাতটি জেলা গঠনের প্রক্রিয়া কার্যকর করা হয়েছিল এবং বর্তমানেও এই নতুন জেলাগুলি গঠনের প্রক্রিয়া কার্যকর রয়েছে। আর এমতাবস্থায় বিগত সোমবার রাজ্য সরকারের তরফ হয়েছে মন্ত্রিসভার বৈঠক আয়োজন করা হয়েছিল তাতে ৭ টির বদলে আরো বেশি সংখ্যক জেলা গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে, এমনটাই জানা গিয়েছে সরকারি সূত্র মারফত প্রকাশিত তথ্য অনুসারে। বিগত মন্ত্রিসভার বৈঠকে বড় জেলাগুলিকে ভেঙে ছোট ছোট একাধিক জেলা গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, কোন কোন জেলাকে ভেঙে কতগুলি নতুন জেলা গঠন সম্ভব তা খতিয়ে দেখার জন্য এক বিশেষজ্ঞ কমিটিও গঠন করেছেন তিনি।
আগামী তিন মাসের মধ্যে এই কমিটিকে জেলা বিভাজন সংক্রান্ত রিপোর্ট দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই রিপোর্টের ভিত্তিতে আগামী দিনে জেলা বিভাজন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেবে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার। এর পাশাপাশি আরো জানা গিয়েছে যে, জেলার নামকরণের ক্ষেত্রে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাবাবেগ এবং ঐতিহ্য যাতে কোনোভাবেই আঘাতপ্রাপ্ত না হয় তার দিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে মন্ত্রিসভার বৈঠকে। এমনকি মূল জেলার নাম কোনভাবেই পরিবর্তন না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে এদিনের মন্ত্রিসভার বৈঠকে। তবে এক্ষেত্রে মূল যে প্রশ্নটি রয়েছে তা হল, আগামী দিনে কোন কোন জেলাকে ভাঙ্গা হতে পারে? আর এই প্রশ্নের উত্তরে জানিয়ে রাখি যে, আগামী দিনে প্রাথমিক পর্যায়ে পুরুলিয়া এবং বীরভূম জেলাকে ভাঙার বিষয় চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:- টাকা ডিপোজিটের ক্ষেত্রেও দিতে হবে চার্জ, নতুন নিয়ম জারি করলো SBI।
অন্যদিকে ইতিপূর্বে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাকে ভেঙ্গে ঝাড়গ্রাম জেলা গঠন করা হলেও এই জেলাটিকে পুনরায় ভাঙার পরিকল্পনা করা হচ্ছে রাজ্য সরকারের তরফে। মনে করা হচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সাধারণ জনগণের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে আগামী দিনে ঘাটালকে নতুন জেলা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। অন্যদিকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ভেঙে একটি নতুন জেলা গঠন করা হবে বলেই জানা গিয়েছে। মূলত পশ্চিমাঞ্চল এবং দক্ষিণবঙ্গের বড় জেলাগুলিকে বিভাজন করে ছোট ছোট জেলায় ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। আর রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত মেনে পশ্চিমাঞ্চল এবং দক্ষিণবঙ্গের কোন কোন জেলাগুলিকে বিভাজন করে ছোট করা সম্ভব তা খতিয়ে দেখতে উদ্যোগী হয়েছে নবগঠিত কমিটি। তবে শুধুমাত্র দক্ষিণবঙ্গ নয়, উত্তরবঙ্গের মালদহ এবং দার্জিলিং জেলা বিভাজন নিয়েও নানাবিধ গুঞ্জন শোনা গিয়েছে। মূলত দার্জিলিংয়ের সমতল অংশকে আলাদা করে একটি নতুন জেলা গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।
বর্তমানে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে ৫টি স্বাস্থ্যজেলা এবং ১৬টি পুলিশের ক্ষেত্রে এই জেলাগুলির বিষয় বিশেষভাবে নজর দেওয়া হবে বলেই জানা গিয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে প্রকাশিত তথ্য মারফত। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাজ্য সরকার প্রকাশিত তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে, জেলা বিভাজনের ক্ষেত্রে আধিকারিকরা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। পর্যাপ্ত আইএএস অফিসার না থাকার কারণে WBCS অফিসারদের হাতে এই দায়িত্ব ন্যস্ত করবেন মুখ্যমন্ত্রী, এমনটাই জানা গিয়েছে প্রকাশিত রিপোর্ট মারফত। তবে আগামী দিনে কোন কোন জেলা বিভাজিত হতে চলেছে এবং কটি ভাগে বিভাজিত হতে চলেছে তা সংক্রান্ত কোনো প্রকার তথ্য এখনো পর্যন্ত প্রকাশ্যে আনা হয়নি, যদিও মনে করা হচ্ছে খুব শীঘ্রই কমিটি রিপোর্ট অনুসারে জেলা বিভাজন সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ্যে আনা হবে।