সাধারণ মানুষের সুযোগ-সুবিধার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প তৈরি করে থাকে কেন্দ্রীয় সরকার (Central Government) বা রাজ্য সরকার (Government of West Bengal)। কিন্তু, এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা হয়তো সরকারি প্রকল্পগুলি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নয় বা প্রকল্পের নাম শুনলেও, বিস্তারিত জানেন না । রাজ্য সরকারের (Mamata Banerjee Government) এমনই প্রকল্পগুলির সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন বহু মানুষ। এমনই একটি প্রকল্প হল যুবশ্রী প্রকল্প (Yuvashree Prakalpa)।
দেশ, রাজ্যে সর্বত্র কাজের হাহাকার।পড়াশোনা করেও চাকরি মিলছে না। বাধ্য হয়ে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করছে অনেকে। কিন্তু সেখানেও ছবিটা দিন দিন ধূসর হয়ে আসছে। ফলে সব মিলিয়ে বেকারের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। এই অবস্থায় কিছুটা হলেও রাজ্যের শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীদের স্বস্তি দিতে পারে যুবশ্রী প্রকল্প (Yuvashree Prakalpa)।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দ্বন্দ ও দুর্নীতির কারণে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক সরকারি ক্ষেত্রে নিয়োগ কার্যত বহুদিন ধরে বন্ধ আছে। মাঝেমধ্যে সামান্য যে টুকটাক নিয়োগ হয় তা শূন্য পদের নিরিখে অতি নগণ্য। ফলে বেকারদের মধ্যে হতাশা ক্রমশই বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলার বেকারদের স্বস্তি দিতে মাস গেলে ১,৫০০ টাকা করে দিচ্ছে রাজ্য সরকার। যুবশ্রী প্রকল্পে এখন বাড়িতে বসেই মাস গেলে এই টাকা পেয়ে যাবেন রাজ্যের বেকাররা।
আজ থেকে ১০ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৩ সালে রাজ্যের শিক্ষিত বেকারদের জন্য যুবশ্রী প্রকল্প চালু করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যারা এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত তাঁদের মাসে মাসে ১,৫০০ টাকা করে ভাতা দিয়ে থাকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। দেখে নেওয়া যাক কারা, কীভাবে এই যুবশ্রী প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন এবং কী কী সুবিধা পাওয়া যাবে?
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যুবশ্রী প্রকল্পে কী সুবিধা পাওয়া যাবে এই প্রকল্পে?
আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয় বেকার যুবক-যুবতীদের । প্রতিমাসে ১৫০০ টাকা করে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয় এই প্রকল্পে । ব্যাঙ্ক অ্যাকউন্টে এই টাকা দেওয়া হয় । সেইসঙ্গে ৬ মাস অন্তর একটি করে সেল্ফ ডিক্লেয়ারেশন সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে । ওই সার্টিফিকেটে উল্লেখ করতে হবে কোন কোন বিষয় শেখার জন্য প্রাপ্ত টাকা ব্যয় করা হয়েছে । চাকরি পেয়েছেন কি না, সেটাও জানাতে হবে ।
আরও পড়ুন : বেড়ে গেল বিনামূল্যে আধার কার্ড আপডেটের সময়! খুশির হাওয়া UIDAI-র ঘোষণায়, শেষ তারিখ কবে?
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যুবশ্রী প্রকল্পের ভাতা কারা পাবেন?
(১) Yuvashree Prakalpa এর আওতায় প্রতি মাসে ১৫০০ টাকা পাওয়ার জন্য আবেদনকারীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
(২) আবেদনকারী যুবক-যুবতীদের বয়স ১৮ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে হতে হবে।
(৩) অবশ্যই মাধ্যমিক পাস হতে হবে। উচ্চশিক্ষিত হলেও অসুবিধা নেই।
(৪) আবেদনকারী যুবক বা যুবতীকে অবশ্যই বেকার হতে হবে। কোনও সরকারি বা বেসরকারি কাজ করলে চলবে না।
যুবশ্রী প্রকল্পে আবেদনের জন্য যেসমস্ত নথির প্রয়োজন পড়বে
যুবশ্রী প্রকল্পে আবেদনের জন্য আপনার কাছে অবশ্যই থাকতে হবে-
(১) আধার কার্ড
(২) ভোটার আইডি
(৩) মাধ্যমিকের মার্কশিট ও অ্যাডমিট কার্ড
(৪) যেকোনও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট
(৫) আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজ ফটো
(৬) কাস্ট সার্টিফিকেট থাকলে তার জেরক্স
যুবশ্রী প্রকল্পে আবেদন করার পদ্ধতি
যুবশ্রী প্রকল্পে আবেদন মূলত অনলাইনে করতে হয়।
- প্রথমেই আপনার প্রয়োজনীয় সমস্ত নথি স্ক্যান করে 20KB থেকে 100KB-এর মধ্যে pdf আকারে আপনার ল্যাপটপ বা ডেস্কটপে সেভ করে রাখুন।
- যুবশ্রী প্রকল্পে আবেদনের জন্য https://employmentbankwb.gov.in/ -এই লিঙ্কে ক্লিক করুন।
- রেজিস্ট্রেশন করে এখানে ঢোকার পর New Enrollment Job Seeker অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপর Accept ও তারপর Continue অপশনে ক্লিক করুন।
- এবার একটি অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম আসবে। সেখানে আপনার সম্বন্ধে যা যা তথ্য চাইবে সব দিয়ে ভর্তি করুন।
- এবার পাসপোর্ট সাইজ ফটো সহ স্ক্যান করে রাখা নথিগুলো সঠিকভাবে আপলোড করুন। সবশেষে Submit অপশনে ক্লিক করুন।
- একেবারে শেষে আপনার এই অ্যাপ্লিকেশনের একটি কপি প্রিন্ট আউট হিসেবে বের করুন। ওটা কাজে লাগবে।
যুবশ্রী প্রকল্পে অনলাইনে আবেদন করার পর কী করতে হবে?
এই প্রক্রিয়ার ৬০ দিনের মধ্যে নিকটবর্তী এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে গিয়ে প্রিন্ট আউট করে রাখা অ্যাপ্লিকেশনটি জমা দিতে হবে। মাথায় রাখবেন ৬০ দিন পেরিয়ে গেলে কিন্তু এই অ্যাপ্লিকেশন ইনভ্যালিড বা বাতিল হয়ে যাবে। এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে গিয়ে আপনি অ্যাপ্লিকেশনের প্রিন্ট আউট জমা দেওয়ার পর আপনাকে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দেওয়া হবে। এটা আপনার নথিভুক্ত ফোন নম্বরে আসবে। সেটা ব্যবহার করে নিজের আবেদনের স্ট্যাটাস চেক করতে পারবেন।