টানা ছুটির সপ্তাহান্তে প্রেক্ষাগৃহ (Theater) ঘিরে জমে উঠেছিল আসল লড়াই। স্বাধীনতা দিবস ও জন্মাষ্টমী মিলিয়ে বাঙালি দর্শক হাত ধরাধরি করে ফিরলেন বড়পর্দায়। একই সঙ্গে মুক্তি পেল তিনটি বড় বাজেটের ছবি—বলিউডের হৃতিক রোশনের ‘ওয়ার ২’, দক্ষিণী সুপারস্টার রজনীকান্তের ‘কুলি’, আর টলিউডের মেগাস্টার দেব এবং শুভশ্রীর ‘ধূমকেতু’। তিনটে ছবির মধ্যে কোনটা সবার নজর কেড়েছে? জানতে প্রতিবেদনটির উপর চোখ রাখুন
দক্ষিণ কলকাতার নবীনা প্রেক্ষাগৃহের উদাহরণই যথেষ্ট। শুরুতে দিনে চারবার দেখানোর পরিকল্পনা থাকলেও দর্শকের ভিড় সামলাতে বাড়িয়ে দিতে হয়েছে আরও একটি শো। দেব-শুভশ্রী জুটির ছবিটি টানা হাউসফুল চলায় তিনদিনেই কেবল এই প্রেক্ষাগৃহ ঘরে তুলেছে কয়েক লক্ষ টাকার আয়। একইসঙ্গে ‘কুলি’-র রাতের শোতেও দর্শকের ভিড় জমেছে, যদিও সংখ্যার পরিসরে ‘ধূমকেতু’র মতো ধারাবাহিক সাফল্য এখনও সেখানে আসেনি।
উত্তর কলকাতার বহু হলে চিত্রটা একই রকম। বিনোদিনী থিয়েটারের চারটে শো-ই দর্শকে পূর্ণ, টিকিটের যা চাহিদা তা প্রত্যাশার বাইরে। আবার প্রাচী সিনেমাহলে হৃতিক রোশনের ছবির বেশ কয়েকটি প্রদর্শনী থাকলেও প্রাইম টাইমের রাশ রয়েছে বাংলা ছবির হাতে। এখানে দর্শকদের মধ্যে নারীদের উপস্থিতি বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয় বলে জানিয়েছেন হলমালিক।
ছবির প্রযোজক রানা সরকার জানিয়েছেন, মুক্তির দিনেই ১৫৩টি প্রেক্ষাগৃহে একযোগে প্রদর্শনের ব্যবস্থা হয়েছিল। এরপর দু’দিনের মধ্যেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৫৭। স্বাধীনতা দিবসে প্রায় ৪০০টি শো হাউসফুল গিয়েছে। তিনদিন শেষে সবমিলিয়ে আয় সাত কোটি টাকারও বেশি ছুঁয়েছে, যা সাম্প্রতিক সময়ে কোনও বাংলা ছবির জন্য বিরল সাফল্য।
ফ্যান ক্লাবের অবদানের প্রসঙ্গও উঠেছে। প্রযোজকের স্বীকারোক্তি—মুক্তির দিন কয়েকটি হলে টিকিট নিজেরা কিনেছিল অনুরাগীরা। তবে এরপর ছবির সাফল্য একেবারেই দর্শকের স্বতঃস্ফূর্ত আগ্রহের ফল।
সব মিলিয়ে প্রমাণ হয়েছে, বড়পর্দায় বলিউড বা দক্ষিণী সুপারস্টারের ভিড়েও বাংলা ছবি যদি শক্তিশালী কনটেন্ট আর জনপ্রিয় জুটি উপহার দেয়, তবে বাঙালি দর্শক আনন্দ নিয়ে সেই ছবি দেখতে হলমুখী হন। আর এবারের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেব-শুভশ্রীর ‘ধূমকেতু’ নিঃসন্দেহে সবার আগে নিজের জায়গা পাকা করেছে।