অসমের সংগীতপ্রেমীরা এখনও অন্ধকারের মধ্যে আছেন জুবিন গর্গের (Zubeen Garg) হঠাৎ মৃত্যু নিয়ে। একসময় মনে করা হয়েছিল, তাঁর মৃত্যু হয়তো নিছক একটি দুর্ঘটনা বা অবহেলার ফল। কিন্তু তদন্ত আঁকড়ে ধরছে এক অন্য দিক, যা নড়েচড়ে বসতে বাধ্য করছে গোটা দেশকে।
গুয়াহাটিতে গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) একে একে জোড়া লাগাচ্ছে রহস্যের খণ্ডচিত্র। SIT প্রধান স্পেশাল ডিজিপি মুন্না প্রসাদ গুপ্ত জানিয়েছেন, তদন্তে নতুন প্রমাণ মিলেছে, যা আগের অভিযোগকে আরও ভয়ঙ্কর রূপ দিয়েছে। এতদিন যা ছিল অবহেলা আর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ, এখন সেখানে যুক্ত হলো খুনের ধারাও। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৩ ধারা এফআইআরে যোগ হওয়ার পর সাজা যেতে পারে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত।
এই নতুন অভিযোগের ছায়া পড়েছে জুবিনের দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগীর উপর। পুলিশ জানাচ্ছে, দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী বিমানবন্দরে নামতেই ধরা পড়েন নর্থ ইস্ট ইন্ডিয়া ফেস্টিভ্যাল আয়োজক শ্যামকানু মহান্ত। অন্যদিকে গুরুগ্রামের এক অ্যাপার্টমেন্ট থেকে হাতেনাতে ধরা হয় তাঁর ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মাকে। দু’জনকেই দ্রুত গুয়াহাটি এনে আদালতে হাজির করা হয়, যেখানে বিচারক ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
আসলে কয়েকদিন আগেই তাঁদের নামে লুক আউট নোটিস জারি হয়েছিল, আর ৬ অক্টোবরের মধ্যে CID দফতরে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশও দেওয়া ছিল। তবে শেষপর্যন্ত সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই জালে আটকে গেলেন দু’জনেই।
এদিকে, স্বামীর মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জুবিনের স্ত্রী গরিমা সাইকিয়া গর্গ। তাঁর অভিযোগ, সবাই জানত জুবিন সাঁতার জানতেন না। তবুও কেন তাঁকে বাঁচানোর তৎপরতা দেখা গেল না? আরও বড় প্রশ্ন—ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মা তাঁদের সব সীমাবদ্ধতা জেনেও কেন যথেষ্ট সতর্কতা নেননি?
গত মাসে সিঙ্গাপুরে আকস্মিক মৃত্যু হয়েছিল এই কিংবদন্তি শিল্পীর। প্রথমে ঘটনার ব্যাখ্যা দাঁড়িয়েছিল অসতর্কতার ফল। কিন্তু তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই স্পষ্ট হচ্ছে—জুবিনের মৃত্যু হয়তো নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত খুনের শিকার হয়েছেন তিনি।