আজ রবিবার রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে বহু প্রতীক্ষিত উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা। সকাল থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্রে ভিড় চোখে পড়েছে পরীক্ষার্থীদের। দীর্ঘ প্রস্তুতির পর প্রায় আড়াই লক্ষেরও বেশি প্রার্থী এবার বসছেন এই পরীক্ষা দিতে। রাজ্যজুড়ে ৪৭৮টি কেন্দ্রে একযোগে আয়োজিত হচ্ছে পরীক্ষা, আর প্রশ্ন ঘিরে আগের অভিজ্ঞতার কারণে এবারে নিরাপত্তা ও নজরদারি আরও শক্ত করা হয়েছে।
পরীক্ষা ও প্রশাসনের প্রস্তুতি
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, কমিশন ও প্রশাসন পুরোপুরি নজরদারির মধ্যে পরীক্ষা পরিচালনা করছে। আগের নবম-দশম শ্রেণির নিয়োগ পরীক্ষার মতো এবারেও বিরোধীরা প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ তুললেও, কোনও যথাযথ প্রমাণ না মেলায় সেই দাবি খারিজ করেন মন্ত্রী। সেই সঙ্গে বিরোধীদের উদ্দেশে কটাক্ষও করতে ছাড়েননি। তার মতে এটি একটি রাজনৈতিক চাপ তৈরির কৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়।
পরীক্ষার কাঠামো
এই পরীক্ষায় মোট ৩৬টি বিষয়ে ১২ হাজার ৫১৪টি শূন্যপদ পূরণ করা হবে। পরীক্ষা শুরুর সময় নির্ধারিত হয়েছে দুপুর ১২টায় এবং চলবে ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। বিশেষভাবে সক্ষম প্রার্থীদের জন্য আধ ঘণ্টা সময় বাড়তি রাখা হয়েছে। প্রার্থীদের সকাল ১০টার মধ্যে কেন্দ্রে রিপোর্ট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে প্রবেশ প্রক্রিয়া সহজ হয়।
বাইরের রাজ্যের প্রার্থী উপস্থিতি
পূর্ববর্তী পরীক্ষার মতো এবারও ভিনরাজ্যের প্রার্থীদের অংশগ্রহণ থাকবে বলে মনে করছে কমিশন, যদিও সঠিক সংখ্যা এখনও জানা যায়নি। শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে চাকরির সুযোগ সীমিত থাকায় বিহার ও উত্তরপ্রদেশ-সহ অন্য রাজ্যের অনেক প্রার্থী বাংলায় সুযোগ খুঁজছেন। এতে আমাদের আপত্তি নেই। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে বাইরের কিছু বেকারেরও চাকরি হচ্ছে।
বাড়তি নিয়ম ও সতর্কতা
ভিতরে প্রবেশে প্রার্থীদের জন্য কিছু বাড়তি নিয়মও জারি করা হয়েছে।
পরীক্ষার্থীরা কেবল স্বচ্ছ বোতলে জল এবং স্বচ্ছ পেন বহন করতে পারবেন।
বাইরে থেকে আনা অন্য কোনও রকমের কলম আনলে সেটি পরীক্ষা হলে জমা দিতে হবে এবং কমিশনের পক্ষ থেকে সরবরাহ করা কলম ব্যবহার করতে হবে।
ঘড়ি নিয়ে হলে প্রবেশ নিষিদ্ধ, পরীক্ষার সময় নজর রাখতে হবে হলের ঘড়ির ওপর।
অ্যাডমিট কার্ডে ভুল থাকলে তা আধারসহ অন্যান্য পরিচয়পত্র মিলিয়ে ছাড় দেওয়া হবে।
যদিও অনেক পুরোনো পরীক্ষার্থী কালো পোশাকে হাজির হয় পরীক্ষা দিতে। তাদের প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে। অন্যদিকে, ‘অল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন’ শূন্যপদের বিস্তারিত তালিকা প্রকাশের দাবি তুলেছে। তবে কমিশন জানিয়েছে, কাউন্সেলিং শুরুর আগে সেই তালিকা প্রকাশ করা হবে।
একদিকে বহু প্রতীক্ষিত পরীক্ষা চলছে কড়া নিরাপত্তার মাঝে, অন্যদিকে ভিড় জমেছে কেন্দ্রগুলিতে—শুধু চাকরিপ্রার্থীর নয়, উদ্বেগ আর প্রত্যাশারও।