পশ্চিমবঙ্গ প্রাইমারি টেট ২০২৩-এর ফল অবশেষে প্রকাশিত হলো। দীর্ঘ ২১ মাসের অপেক্ষার পর বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) এই ফলাফল জানাল প্রাইমারি এডুকেশন বোর্ড। কয়েক লক্ষ পরীক্ষার্থীর প্রত্যাশা ও টেনশনের অবসান হলেও ফলাফলের ছবিতে ধরা দিল আরেক বাস্তবতা—পাসের হার ভয়াবহভাবে কম।
পরীক্ষার সারসংক্ষেপ
২০২৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর এই টেট পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মোট ৩ লাখ ৯ হাজারের বেশি প্রার্থী নাম নথিভুক্ত করলেও পরীক্ষায় বসেন ২ লাখ ৭৩ হাজার জন। তাঁদের মধ্য থেকে উত্তীর্ণ হতে পেরেছেন মাত্র ৬,৭৫৪ জন। অর্থাৎ সামগ্রিক পাসের হার দাঁড়িয়েছে ২.৪৭ শতাংশে, যা সাম্প্রতিক সময়ে অন্যতম কম বলে ধরা হচ্ছে।
টপার ও মেধাতালিকা
শীর্ষে রয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের ইনা সিংহা। তিনি সর্বোচ্চ ১২৫ নম্বর পেয়ে এবার টেটে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন। দ্বিতীয় স্থানে মুর্শিদাবাদের কজল কুটি, সমান ১১৬ নম্বর পেয়েছেন বাঁকুড়ার সৌমিক মণ্ডলও—তবে বিভাগের ভিত্তিতে তিন নম্বরে তিনি। এরপর উত্তর দিনাজপুরের স্বর্ণেন্দু ভর (১১৪) এবং উত্তর ২৪ পরগনার ইরফান আলি (১১৪) স্থান করে নিয়েছেন প্রথম পাঁচে।
পাস নম্বর ও ক্যাটাগরি ধরে ফলাফল
জেনারেল ক্যাটাগরিতে পাস নম্বর ছিল ৯০, আর এসসি, এসটি, ওবিসি, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও এক্স-সার্ভিসম্যানদের জন্য নির্ধারিত ছিল ৮২। মেধাতালিকায় কার্যত সাধারণ ও সংরক্ষিত উভয় শ্রেণির পরীক্ষার্থীরই উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। জেলা ধরে দেখা গেছে পূর্ব বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া ও উত্তর দিনাজপুরের পরীক্ষার্থীরা তুলনামূলক ভাল ফল করেছেন।
ফলাফল কীভাবে পাওয়া যাবে
প্রার্থীরা তাঁদের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও জন্মতারিখ দিয়ে বোর্ডের সরকারি ওয়েবসাইটে (wbbpe.wb.gov.in) লগ-ইন করে মার্কশিট ডাউনলোড করতে পারবেন। আগামীকাল (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টা থেকে OMR শিট দেখতে পাওয়া যাবে অনলাইনে।
এরপর কী
এই টেট উত্তীর্ণ হওয়ার অর্থই হলো শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের দৌড়ে থাকার সুযোগ। প্রাথমিক শিক্ষকের প্রায় ১৩,৪২১টি পদে শীঘ্রই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রত্যেক যোগ্য প্রার্থীকে বোর্ড থেকে একটি টেট সার্টিফিকেট দেওয়া হবে, যার মেয়াদ থাকছে ৭ বছর। এই সার্টিফিকেটই নিয়োগের সময় অপরিহার্য নথি হিসাবে মানা হবে।
চরম প্রতিযোগিতার মুখে দাঁড়িয়ে প্রার্থীদের হাতে এসেছে সাফল্যের টিকিট, তবে সংখ্যার ছবিই বলে দিচ্ছে—এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া কতটা কঠিন হয়ে উঠেছে।