পুজোর আমেজের মাঝেই রাজ্যের একাংশ সরকারি কর্মী ও আন্দোলনকারী শিক্ষক-কর্মীদের জন্য এল বড় দুঃসংবাদ। চাকরিহারা আন্দোলনের অন্যতম সক্রিয় মুখ সুমন বিশ্বাস এবার চরম আর্থিক চাপে পড়েছেন। জানা যাচ্ছে, টানা দুই মাস তিনি বেতন পাননি। অগস্ট থেকে শুরু করে সেপ্টেম্বর—দুটো মাসেই তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এক পয়সাও ঢোকেনি। তবে এর পিছনেও রয়েছে বড়ো ঘটনা। সম্পূর্ণ জানতে হলে প্রতিবেদনটি পড়তে থাকুন।
জানা যাচ্ছে, SSC আন্দোলনে সরাসরি ভাবে জড়িত থাকার কারণে স্কুলে নিয়মিত হাজিরা না দেওয়াতেই সুমনের বেতন বন্ধ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। আর সেই কারণেই উৎসবের দিনে তাঁর বাড়ি যেন বিষাদের ছায়ায় ঢেকে গিয়েছে। তবুও সুমনের দাবি, যে কোন মূল্যেই তিনি এই আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াবেন না। টাকা না দিলেও পুজোর পর থেকে রাস্তায় সত্যের জন্য লড়ে যাবেন।
প্রসঙ্গত ২০১৬ সালের নিয়োগ দুর্নীতির পর বিচারপতির নির্দেশে গোটা প্যানেল বাতিল হয়েছিল। এর ফলে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-কর্মী এক ঝটকায় চাকরি হারিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে নিজেকে যোগ্য বলে দাবি করে আদালতের লড়াই ও রাস্তায় আন্দোলন চালিয়ে গেছেন বহুজন। সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে পরবর্তীতে নিয়োগ প্রক্রিয়া ফের শুরু হলেও ডিসেম্বর পর্যন্তই আপাতত চালু রাখা হয়েছে অনেকের চাকরি। চাকরি টিকিয়ে রাখতে এবার তাঁদেরও বসতে হয়েছে নতুন পরীক্ষায়।
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, গত সেপ্টেম্বরে পরীক্ষাও শেষ হয়েছে। আবেদনকারীর সংখ্যা ২০১৬ সালের নিয়োগের তুলনায় প্রায় ২ লক্ষ ৩০ হাজার বেশি। এই পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বহু ‘যোগ্য’ শিক্ষকরাও রয়েছেন, যাঁরা আগের দুর্নীতিগ্রস্ত প্রক্রিয়ায় বঞ্চিত হয়েছিলেন।
এদিকে, পরীক্ষার আগে ‘অযোগ্য’ প্রার্থীর নামের তালিকা প্রকাশ করেছিল এসএসসি। সেই তালিকায় তৃণমূলের একাধিক রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী পরিবার ও ঘনিষ্ঠদের নাম উঠে আসায় রাজনৈতিক মহলে চর্চা তুঙ্গে। এর ফলে নিয়োগ ইস্যুতে নতুন করে তীব্র আকার নিয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
অতএব দেখা যাচ্ছে, একদিকে চাকরিহারা শিক্ষকরা তাঁদের বেতন হারিয়ে অসহায় অবস্থায় দাঁড়িয়ে, অন্যদিকে হাজার হাজার প্রার্থী নিয়োগ পরীক্ষায় আশার আলো খুঁজছেন। ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়, সেটাই এখন রাজ্যের শিক্ষক-চাকরিপ্রার্থীদের কাছে বড় প্রশ্ন।