রাজ্যের বহুল আলোচিত নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নতুন মোড়। দীর্ঘ দিনের আইনি লড়াই শেষে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee) ঘিরে এ বার বড় সিদ্ধান্ত দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। তবে আদালতের এই গুরুত্বপূর্ণ রায়ের সঙ্গে থাকছে বেশ কিছু কড়া শর্ত।
হাই কোর্টের সিদ্ধান্ত
শুক্রবার অর্থাৎ আজ বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের একক বেঞ্চ জানায়, আপাতত জামিনে ছাড়া যেতে পারে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। তবে তাঁর জন্য শর্ত রেখেছে আদালত। পার্থকে পাসপোর্ট জমা দিতে হবে এবং বিচারাধীন সময়কালে কোনও সরকারি বা সাংবিধানিক পদে নিযুক্ত হওয়া যাবে না। এ ছাড়াও আদালতের অনুমতি ছাড়া তিনি কলকাতার ট্রায়াল কোর্টের এখতিয়ার ছেড়ে বাইরে যেতে পারবেন না।
মামলার পটভূমি
২০১৪ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) ও মাধ্যমিক শিক্ষা দফতরের বিভিন্ন নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। বহু অযোগ্য প্রার্থী ঘুষ দিয়ে শিক্ষক ও অশিক্ষক পদে ঢুকেছেন বলে অভিযোগ। ২০২২ সালে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে দায়িত্ত্ব নেয় সিবিআই। এই মামলাতেই একসময়ের ক্ষমতাধর মন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এমনকি এ বছরের এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্টও নির্দেশ দিয়েছে ২০১৬ সালের নিয়োগ প্যানেলে চাকরি পাওয়া ২৫,৭৫২ জনের নিয়োগ বাতিল করতে।
রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত প্রেক্ষাপট
২০০১ সাল থেকে বিধায়ক এবং ২০১১ থেকে টানা মন্ত্রী থাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায় একসময় তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের অন্যতম মুখ ছিলেন। ২০১৬ সালে তিনি শিক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব পান। কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগ বাঁধ ভাঙলে ২০২২ সালে মন্ত্রিত্ব হারান এবং শেষ পর্যন্ত স্থান হয় জেলে।
বর্তমান পরিস্থিতি
আইনজীবীরা আশাবাদী, প্রাথমিক নিয়োগ মামলায় জামিন মিললেই তাঁর জেলমুক্তি নিশ্চিত হবে, কারণ অন্য সব মামলায় তিনি ইতিমধ্যেই জামিনে রয়েছেন। এখন চূড়ান্ত মুক্তি আদালতের পরবর্তী প্রক্রিয়ার উপর নির্ভর করছে।
চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ
অন্যদিকে, এ মামলার প্রেক্ষাপটেই ক্ষোভ উগরে দিতে থাকছেন চাকরিপ্রার্থীরা। বৃহস্পতিবার সল্টলেকে অনেকে বিক্ষোভে শামিল হয়ে ফের দাবি জানান, নতুনভাবে আয়োজিত স্টেট লেভেল সিলেকশন টেস্ট (SLST)-এর মাধ্যমে স্বচ্ছ ও ন্যায্য নিয়োগ চাই।