পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের আন্দোলনের মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ (DA) মামলা। দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য ডিএর দাবিতে কর্মীদের চাপ অব্যাহত, আর এবার সর্বোচ্চ আদালতের আসন্ন শুনানিকে কেন্দ্র করে তাদের প্রত্যাশা তুঙ্গে। তাই পরের শুনানির দিনক্ষণ ঠিক হয়েছে ২৬শে আগস্ট। আদালতের কার্যতালিকায় মামলাটি বিশেষভাবে শীর্ষে রাখা হয়েছে, যা কর্মীদের কাছে ইতিবাচক ইঙ্গিত হিসেবেই ধরা হচ্ছে।
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের কজলিস্ট প্রকাশিত হওয়ার পর ছবি আরও স্পষ্ট হয়েছে। সেই কজলিস্ট অনুযায়ী, বিচারপতি সঞ্জয় কারোল এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি থাকবে। স্বস্তির বিষয় হলো মামলাটি তালিকার চতুর্থ স্থানে রাখা হয়েছে। সাধারণত প্রথম দিকের মামলাগুলির শুনানির জন্য বিচারপতিদের হাতে পর্যাপ্ত সময় থাকে। ফলে ডিএ সংক্রান্ত এই বহুল আলোচিত মামলাটির গভীরভাবে বিচার হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করছেন সরকারি কর্মীরা।
গত ১২ আগস্ট মামলার শুনানি স্থগিত হওয়ায় কিছুটা হতাশা তৈরি হয়েছিল, তবে ২৬ আগস্টের শুনানিকে কেন্দ্র করে এখন আবার নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে পূর্বেই যুক্তি দেওয়া হয়েছে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে কেন্দ্রের সমান হারে ডিএ প্রদান সম্ভব নয়। তাদের দাবি, কেন্দ্র ও রাজ্যের আর্থিক কাঠামো এক নয়, আর্থিক অবস্থার সঙ্গে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা যথাযথ নয়।
তবে কর্মীদের দাবি, ডিএ দেওয়া কেবল একটি আর্থিক দায়বদ্ধতা নয়, এটি সরকারি নীতিরই অংশ। নির্দিষ্ট সময় অন্তর ডিএ না দেওয়া কর্মীদের প্রতি অন্যায়। এমনকি বকেয়া থাকলেও কিস্তিতে পরিশোধের আর্জি জানিয়েছেন কর্মীদের আইনজীবীরা। এই মামলাটি বর্তমানে রাজ্যের লাখো সরকারি কর্মীর জীবনে বড় প্রভাব ফেলতে চলেছে। কারণ ডিএ তাদের মাসিক উপার্জনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
সব মিলিয়ে রাজ্যের হাজার হাজার সরকারি কর্মচারীর নজর এখন সুপ্রিম কোর্টের দিকে। আদালতের রায় রাজ্যের জন্য নতুন চাপ তৈরি করতে পারে, আবার কর্মীদের স্বপ্নও পূরণ করতে পারে। ২৬ আগস্টের শুনানি তাই শুধুই একটি মামলার তারিখ নয়—এটি হয়ে উঠেছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ভবিষ্যতের দিশা নির্ধারণের দিন। যার ওপর নির্ভর করবে কর্মীরা আর্থিক স্বস্তি পাবেন কি না।