টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত কলকাতা এবার আরও এক বড়সড়ো সমস্যার মুখে। শহরের রাস্তায় হাঁটু থেকে কোমর সমান জল জমে জনজীবন যখন কার্যত থমকে| চারিদিক থেকে নানা দুর্ঘটনার খবর মিলতে শুরু করেছে, এরই মধ্যে হঠাৎ নতুন বিপদের খবর জানালো কলকাতা পুরসভা। যা বুধবার ভোর থেকেই বহু মানুষের দুশ্চিন্তা বাড়াতে চলেছে।
টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত শহর
সোমবার রাত থেকে অবিরাম বৃষ্টিতে কলকাতার রাস্তাঘাট ডুবে যায়। কখনও হাঁটু, আবার কোথাও কোমর-সমান জলে আটকে পড়েন বাসিন্দারা। অফিসযাত্রী থেকে রোগী পৌঁছে দেওয়া—প্রয়োজনীয় কাজেও মানুষ বাধা পেয়েছেন। আবহাওয়াজনিত এই বিপর্যয়ের মধ্যেই দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনাও ধরা পড়েছে। এ পর্যন্ত বৃষ্টিজনিত দুর্ঘটনায় অন্তত এগারো জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে, যা আতঙ্ক আরও বাড়িয়েছে।
নতুন সংকটের সামনে শহর
এমন দুর্যোগের মধ্যেই নগরবাসীর মাথায় চাপছে নতুন সমস্যা। মঙ্গলবার রাতে কলকাতা পুরসভা জানায়, উত্তর কলকাতার বাগমারি বুস্টার পাম্পিং স্টেশনে আকস্মিকভাবে একটি বড়সড় ভালভ ফেটে গেছে। এই পাম্প থেকেই উল্টোডাঙা, কাঁকুড়গাছি, বাগমারি-সহ কয়েকটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় জল সরবরাহ করা হয়। ফলে বুধবার সকাল থেকে অন্তত চারটি ওয়ার্ডে পানীয় জলের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
যুদ্ধকালীন মেরামতির চেষ্টা
খবর পেয়েই গভীর রাত থেকে পুরসভার শীর্ষকর্তারা ও জল সরবরাহ বিভাগের আধিকারিকরা মেরামতির কাজ শুরু করেন। দ্রুততার সাথে মেরামতির কাজ শুরু হলেও মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত তা সম্পূর্ণ শেষ করা যায়নি। তাই প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, বুধবার সকাল থেকে মুচিবাজার, ফুলবাগান-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় পৌর কল থেকে জল না আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
নাগরিকদের আশঙ্কা আরও বাড়ল
সমস্যা এখানেই শেষ নয়। বৃষ্টির জল বহু বাড়ির রিজার্ভারে ঢুকে সেগুলিও দূষিত করেছে। ফলে অনেকের ভরসা ছিল কেবল পৌরসভার কলের জল। সেটিও বন্ধ হয়ে গেলে সকাল থেকেই মানুষ পড়বেন তীব্র জলকষ্টে। বাসিন্দাদের কথায়, রাস্তাজল কখন নামবে তা বোঝা যাচ্ছে না, আর তার সঙ্গে যদি পানীয় জলও বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে দিনযাপন কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়বে।
অনিশ্চয়তার মধ্যে অপেক্ষা
কলকাতা পুরসভা আশ্বাস দিয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব মেরামতির কাজ শেষ করে জল সরবরাহ স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। তবে পরিস্থিতি কখন স্বাভাবিক হবে, তা নিয়ে এখনই সুনির্দিষ্ট কিছু জানাতে পারছে না প্রশাসন। ফলে জলমগ্ন শহরে নতুন করে যে সঙ্কট সামনে এসেছে, তা কাটতে সময় কতটা লাগবে, সেই উত্তরেই তাকিয়ে উত্তর কলকাতার সাধারণ মানুষ।