রামনগর বিধানসভা এলাকায় তৃণমূলের ভেতরে চলা যে মতবিরোধ এতদিন আড়ালে ছিল, তা এবার প্রকাশ্যে এসে পড়ল। শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে রাজ্য নেতৃত্ব সরাসরি পদক্ষেপ নিয়ে ওই কেন্দ্রের তিনজন জনপ্রতিনিধিকে শোকজ় (Show-cause) নোটিশ পাঠিয়েছে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা।
বৃহস্পতিবার শোকজ়ের চিঠি হাতে পেয়েছেন রামনগরের পদিমা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুশান্ত পাত্র, জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ তমালতরু দাস মহাপাত্র এবং রামনগর ১ পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ কৌশিক বারিক। অভিযোগ, আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে তারা ‘স্থানীয় ভূমিপুত্র’ প্রার্থী দাবি তুলে দলের নীতির বিরোধিতা করেছেন। যা দলের ঘোষিত নীতি বিরুদ্ধ। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পীযূষ পণ্ডা জানিয়েছেন, রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশেই এই শো-কজ় পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
জেলা সূত্রে আরও খবর, সম্প্রতি বিজয়া সম্মিলনী নিয়ে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ মতভেদ চরমে পৌঁছেছিল। দলের নির্ধারিত দিবসের বাইরে সুশান্ত ও তমালতরুর উদ্যোগে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। সেই মঞ্চেই উঠে আসে স্লোগান—‘বহিরাগত নয়, আমরা ভূমিপুত্র চাই’। এই দাবি ঘিরেই অখিল গিরি ও উত্তম বারিক গোষ্ঠীর দূরত্ব আরও গভীর হয়েছে। স্থানীয় তৃণমূলের একাংশের এই অবস্থানে পুরনো নেতৃত্বকে আঘাত করেছিল বলে অনেকেই মনে করছেন।
অখিল গিরি রামনগরের চারবারের জনপ্রতিনিধি ও বর্তমান বিধায়ক, অন্যদিকে উত্তম বারিক পটাশপুরের বিধায়ক এবং এই এলাকার রাজনীতিতে প্রভাবশালী মুখ। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বিশ্লেষণ, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ধরনের প্রকাশ্য বিভাজন তৃণমূলের ভোট কৌশলে বড় চাপ তৈরি করতে পারে।বিশেষ করে বিধানসভা নির্বাচন সামনে রেখে তৃণমূলের এই অন্দরের দ্বন্দ্ব দলের কর্মীদের মধ্যে অস্থিরতা বাড়াচ্ছে। দলের অভ্যন্তরীণ সংকট এখন রামনগরের রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।