টলিউডের ঝলমলে আলোয় দর্শকের মন জয় করলেও ব্যক্তিগত জীবনে দীর্ঘদিন ধরে এক অস্থিরতার ভেতর দিয়ে গিয়েছেন অভিনেত্রী নয়না গঙ্গোপাধ্যায়। সম্প্রতি সেই নীরবতা ভেঙে তিনি প্রকাশ্যে এনেছেন নিজের জীবনের একটি অন্ধকার অধ্যায়—যা ইতিমধ্যেই টলিপাড়ায় তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
নীরবতা ভাঙলেন নয়না
সোশ্যাল মিডিয়ায় এক খোলামেলা পোস্টে অভিনেত্রী জানান, তিন বছরের সম্পর্ক তাঁর জীবনে পরিণত হয়েছিল যন্ত্রণার আরেক নাম হয়ে। নয়নার দাবি, সেই সময় তিনি ছিলেন প্রতিনিয়ত মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার। দিনের পর দিন চলতে থাকা এই চাপে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।
অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিচিত মুখ
এই অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন কলকাতার কোরিওগ্রাফার টুবান চক্রবর্তী। টেলিভিশনের জনপ্রিয় নৃত্য প্রতিযোগিতা ‘ডান্স বাংলা ডান্স’-এর একসময়ের বিজয়ী টুবান বর্তমানে একটি নাচ শেখানোর প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার। নয়নার অভিযোগ, প্রেমের সম্পর্কের আড়ালে তাঁকে বারবার অপমানিত ও অবমূল্যায়িত হতে হয়েছে। সময়ের সঙ্গে মানসিক আঘাত আরও গভীর থেকে গভীরতর হতে থাকে।
ক্যারিয়ারেও আঘাত
অভিনেত্রীর আক্ষেপ, শুধু ব্যক্তিগত জীবনেই নয়, এর প্রভাব পড়ে তাঁর পেশাতেও। ধীরে ধীরে কাজ থেকে দূরে সরে যান তিনি। দীর্ঘ সময় ধরে প্রজেক্ট হারানোয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কেবল অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নয়, নষ্ট হয়েছে আত্মবিশ্বাসও।
পুলিশের পদক্ষেপ
সব দিক ভেবে অবশেষে নয়না সিদ্ধান্ত নেন আর চুপ থাকবেন না। অভিযোগ সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। জানা গেছে, পাটুলি থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই টুবান চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করেছে এবং তাঁকে আদালতে তোলা হয়েছে। তবে আইনি প্রক্রিয়া এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তদন্ত সম্পন্ন না হলে নিশ্চিত হওয়া যাবে না অভিযোগের সত্যতা।
প্রতিক্রিয়া টলিপাড়ায়
নয়নার এই খোলামেলা পদক্ষেপে টলিউড মহল কয়েকভাগে বিভক্ত হয়েছে। কেউ বলছেন, ব্যক্তিগত যন্ত্রণা প্রকাশ্যে আনা সহজ নয়, আবার অনেকে মনে করছেন অন্যায় সহ্য না করে শেষ পর্যন্ত আওয়াজ তোলা অত্যন্ত জরুরি।
শুধু ব্যক্তিগত নয়, বৃহত্তর বার্তা
নয়না জানিয়ে দিয়েছেন, তিন বছরের যন্ত্রণা তিনি আর লুকিয়ে রাখতে চান না। তাঁর এই সিদ্ধান্ত হয়তো একা একজন শিল্পীর লড়াই, কিন্তু এর ভেতর লুকিয়ে আছে একটি বড় বার্তা—অন্যায়ের সামনে আর নীরবতা নয়, আইনের পথেই চলবে লড়াই।