দীর্ঘ দ্বিধা-দ্বন্দ্বের অবসান। রাজ্যে আসন্ন স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে তৈরি হওয়া জট শেষ হলো। বহু প্রার্থীর মনে আশঙ্কা ছিল, পরীক্ষা হয়তো পিছিয়ে যেতে পারে। তবে কমিশন ও প্রশাসনের তরফে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে—নির্ধারিত তারিখেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ফলে দীর্ঘদিনের অনিশ্চয়তা এখন অনেকটাই কেটে গেল, আর পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ফের তৈরি হয়েছে স্বস্তির আবহ।
সময়সূচি চূড়ান্ত
সরকারি সূচি অনুযায়ী, নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা হবে আগামী ৭ ই সেপ্টেম্বর এবং একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা হতে চলেছে ১৪ই সেপ্টেম্বর। দুই দিনে মিলিয়ে প্রায় ৫ লক্ষ ৮০ হাজার চাকরি প্রত্যাশী বসবেন এই গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায়। এত বিপুল সংখ্যক প্রার্থীদের উপস্থিতিতে রাজ্যজুড়ে বড়সড় প্রশাসনিক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
পিছোতে না দেওয়ার কারণ
সুপ্রিম কোর্ট মৌখিকভাবে পরীক্ষা পিছোনোর পরামর্শ দিলেও রাজ্যের অবস্থান একেবারেই আলাদা। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্তমানে কর্মরত (অযোগ্য ঘোষিতদের বাদে) শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা দায়িত্বে থাকবেন। তাই তার মধ্যেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা বাধ্যতামূলক। অন্যথায় নতুন শিক্ষাবর্ষে বড় শিক্ষক সংকট তৈরি হবে।
সেপ্টেম্বরের পরই শুরু হবে দুর্গাপুজোর ছুটি, ফলে দেরি হলে ফল প্রকাশ ও নিয়োগে জটিলতা তৈরি হতে পারে। তাই শুধুমাত্র নিয়োগ কার্য দ্রুত শেষ করতে সেপ্টেম্বরেই পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত স্থির করা হয়েছে। সেই কারণেই পিছোনোর কোনো সম্ভাবনা নেই।
নিরাপত্তায় কড়া নজর
পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই নবান্নে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ সংশ্লিষ্ট জেলার প্রশাসন ও পুলিশকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, প্রতিটি জেলায় একজন অতিরিক্ত জেলা শাসক সামগ্রিক দায়িত্বে থাকবেন। এর পাশাপাশি প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদমর্যাদার আধিকারিক থাকবেন তত্ত্বাবধানে। স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণভাবে পরীক্ষা আয়োজনই এখন প্রশাসনের মূল লক্ষ্য।
পরীক্ষার্থীদের স্বস্তি
কমিশনের এই সিদ্ধান্তে প্রার্থীরা অনেকটা নিশ্চিন্ত। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে নির্দিষ্ট দিনে পরীক্ষা হতে চলেছে, এই খবরেই স্বস্তি ফিরে এসেছে প্রায় ছয় লক্ষ পরীক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের মধ্যে। সব মিলিয়ে, আসন্ন এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা কার্যত দূর হয়েছে।