স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)-এর নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে চলমান বিতর্ক নতুন মোড় নিল মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে। সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছিল এমন এক তালিকা, যেখানে ১৮০৬ জনকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অযোগ্য বলে ঘোষণা করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, নিয়োগ পরীক্ষার সময় নানা গড়মিল ও অনিয়ম ধরা পড়েছে। ফলত, ওই তালিকাভুক্তদের ভবিষ্যতে পরীক্ষায় বসার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
এই ঘোষণার পর থেকেই ক্ষোভ জমছিল বাদপড়া প্রার্থীদের মধ্যে। অবশেষে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হন। দাবি ছিল, আসন্ন ৭ ও ১৪ সেপ্টেম্বর নির্ধারিত পরীক্ষায় বসার সুযোগ যেন দেওয়া হয়। কিন্তু এদিন শুনানির শুরুতেই বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য স্পষ্ট অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
তিনি সরাসরি প্রশ্ন তোলেন: “এতদিন আপনারা কোথায় ছিলেন?”। আদালতের পর্যবেক্ষণ, এমন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর অবিলম্বে যদি কোনও আবেদন জানানো হতো, তা বিবেচনার অবকাশ থাকত; কিন্তু এত দেরিতে আসা আর গ্রহণযোগ্য নয়।একইসঙ্গে বিচারপতি আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই কমিশন এই সংক্রান্ত তালিকা প্রকাশ করেছে। সেক্ষেত্রে তালিকার বৈধতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তোলার অবকাশ আদালতে নেই।
আবেদনকারীদের আইনজীবীরা দাবি করেন, তাঁদের মক্কেলরা প্রকৃত অর্থে ‘দাগি’ শ্রেণিভুক্ত নয় এবং কমিশন ভ্রান্ত ধারণার বশে তাঁদের অযোগ্য ঘোষণা করেছে। কিন্তু কমিশনের তরফে যুক্তি রাখা হয়, ওএমআর শিট কারচুপি থেকে শুরু করে উত্তরের অস্বাভাবিক গড়মিল—এই সব কারণেই তালিকা চূড়ান্ত হয়। এই সব তথ্যের ভিত্তিতেই সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের ‘অযোগ্য’ ঘোষণা করা হয়েছে।
ফলে মামলার নিষ্পত্তি খুব একটা দেরি লাগেনি। হাইকোর্ট স্পষ্ট জানায়, আবেদন গ্রহণযোগ্য নয় এবং মামলাটি খারিজ করা হল।এর ফলে ১৮০৬ জন প্রার্থী আসন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় বসার সুযোগ হারালেন।
এই রায়ের মাধ্যমে আদালত কার্যত একটি বড় বার্তা দিল—‘অযোগ্য’ একবার ঘোষিত হলে সেই পরিচয় মুছে ফেলার সুযোগ আর সহজে মিলবে না। পাশাপাশি এটা-ও বোঝানো হল, আইনই চূড়ান্ত। তাই আইনি প্রক্রিয়ার সময়সীমা মানা জরুরি, দেরি করে এসে দাবি জানালে সুযোগ পাওয়া অসম্ভব।