বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে SIR-এর মাঝেই ফের প্রশাসনিক চাপের মুখে রাজ্য সরকার। এবার অভিযোগ উঠেছে ERO (Electoral Registration Officer) নিয়োগে বেনিয়মের। এই বিষয়ে নবান্নকে সরাসরি কড়া বার্তা পাঠিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। আর প্রশাসনিক মহলে শুরু হয়েছে চাপা গুঞ্জন। সূত্রের খবর, সূত্রের খবর, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে সরাসরি চিঠি পাঠিয়ে কমিশন জানতে চেয়েছে—নীতিনিয়ম মেনে কি এই নিয়োগ হয়েছে, না কি নিয়মভঙ্গ করে পদ পূরণ করা হয়েছে?
তথ্য অনুযায়ী, কমিশনের নিয়ম খুবই স্পষ্ট—ERO পদে দায়িত্ব নিতে পারেন নির্দিষ্ট পদমর্যাদার অফিসার। অথচ বাংলায় দেখা যাচ্ছে এসডিও-রও নীচের স্তরের কর্মীদের এই সংবেদনশীল পদে বসানো হয়েছে। যা কমিশনের গাইডলাইন অনুযায়ী অগ্রহণযোগ্য। কমিশনের মতে, এই ব্যবস্থা নিয়মবহির্ভূত এবং নির্দেশিকা ভঙ্গের শামিল। তার ওপর, রাজ্যের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক যুক্তি বা ব্যাখ্যা এখনও না মেলায় কমিশনের অসন্তোষ আরও বেড়েছে।
সূত্র জানাচ্ছে, মুখ্য নির্বাচন অফিসার (CSE) আগেই এই নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে, তবে সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অবশেষে ৩ অক্টোবর কমিশনের আনুষ্ঠানিক চিঠি পৌঁছতেই নবান্ন ও প্রশাসনিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। রাজ্য সরকারের ব্যাখ্যা, পর্যাপ্ত সংখ্যক এসডিও না থাকায় বিকল্পভাবে কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে কমিশন সেই যুক্তি প্রাথমিকভাবে গ্রহণ করেনি, বরং এতে রাজ্যের প্রতি কমিশনের অসন্তোষ আরও বেড়েছে।
বিতর্ক ঘিরে তৎপর বিরোধী শিবিরও। বিরোধীরা স্বাভাবিকভাবেই সুযোগ হাতছাড়া করেনি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ব্যঙ্গ মন্তব্য—“যখন SIR প্রক্রিয়া চলছে, তখন যদি দায়িত্বে থাকা অধিকর্তাদের নিয়েই প্রশ্ন উঠে তাহলে ভোট প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা নিয়ে কীভাবে ভরসা রাখা যায়?” শুধু তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক মন্তব্য এবং সেই বৈঠকে মুখ্যসচিবের উপস্থিতি নিয়েও কমিশনের কপালে ভাঁজ পড়েছে।।
এখন প্রশাসনিক মহলে জল্পনা, কমিশনের চিঠি কি নতুন সংঘাতের সূচনা? আইন অনুযায়ী, সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে প্রমাণ ছাড়া অভিযোগ তোলা দণ্ডনীয় অপরাধ—তবু সংঘাতের আবহ ঘন হচ্ছে। বিধানসভা ভোটের আগে এই সিদ্ধান্তে রাজ্য-কমিশনের সম্পর্ক কতটা টানটান হয়, সেদিকেই এখন নজর রাজ্যজুড়ে।