মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) আর্থিক অঙ্গনে ফের বড় আলোচনার ঝড় তুলেছে সাতারার এক সমবায় ব্যাঙ্ক। হঠাৎ করেই ব্যাংকটির কার্যক্রম থমকে যাওয়ায় চাঞ্চল্য গ্রাহকদের মধ্যে। কেউ জানেন না, আসলে কী ঘটেছে পর্দার আড়ালে। রাজ্যের অন্যান্য ব্যাঙ্কেও তাই এখন উৎকণ্ঠার ছায়া।
সম্প্রতি জানা যায়, জিজামাতা মহিলা সমবায় ব্যাঙ্কের উপর কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। মূলধনের ঘাটতি এবং ভবিষ্যৎ আয়ের কোনও বাস্তব সম্ভাবনা না থাকায় ব্যাংকটির লাইসেন্স বাতিল করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার পর থেকেই সব ধরনের লেনদেন বন্ধ, ফলে গ্রাহকেরা আপাতত নিজেদের অর্থ তুলতেও পারছেন না।
তবে এটাই প্রথম নয়। এর আগেও ২০১৬ সালের জুনে একবার লাইসেন্স হারিয়েছিল এই ব্যাঙ্ক। পরে ২০১৯ সালের অক্টোবরে শর্তসাপেক্ষে ফের অনুমোদন পাওয়া যায়। কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি—বরং রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভাষায়, আর্থিক অবস্থার “ধারাবাহিক অবনতি” তে পড়ে ব্যাঙ্কটি।
অন্তরালের তথ্য আরও উদ্বেগজনক। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নথিতে জানা গেছে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরের ফোরেনসিক অডিট শুরু হলেও ব্যাঙ্ক প্রশাসনের সহযোগিতা না থাকায় তা শেষ করা যায়নি। ফলে ব্যাঙ্কের প্রকৃত আর্থিক অবস্থার পূর্ণ মূল্যায়ন সম্ভব হয়নি। তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ—জিজামাতা মহিলা সমবায় ব্যাঙ্ক বর্তমানে তার সমস্ত আমানত ফেরত দিতে সক্ষম নয়।
ঠিক এই কারণেই ৭ অক্টোবর ২০২৫ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে ব্যাঙ্কের ব্যবসা। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এখন মহারাষ্ট্রের সমবায় রেজিস্ট্রারকে একজন লিক্যুইডেটর নিয়োগের অনুরোধ জানিয়েছে, যাতে পাওনাদারদের অর্থ ফেরতের প্রক্রিয়া শুরু হয়। আপাতত গ্রাহকরা ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স অ্যান্ড ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশন (DICGC)-এর আওতায় সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত দাবির সুযোগ পাবেন। কিন্তু নতুন করে জমা বা লেনদেন শুরু হওয়ার সম্ভাবনা এই মুহূর্তে কার্যত শূন্য।

