পাক অধিকৃত কাশ্মীর (PoK) আবারও অশান্ত হয়ে উঠেছে। নীলম ভ্যালি ঘিরে হঠাৎই উত্তেজনার আবহে রাস্তায় নেমেছেন হাজার হাজার মানুষ। শান্তিপূর্ণ জমায়েত ঘিরে প্রথমে কৌতূহল, পরে আতঙ্ক— শেষমেশ রক্তপাত। ঠিক কী ঘটল সেখানে? জানতে সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটির উপর চোখ রাখুন।
রাস্তায় অচেনা ছবির সাক্ষী
আন্দোলনকারীদের দাবি— তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে হাতে ব্যানার ও পতাকা নিয়ে শুধুমাত্র সমস্যার কথা সরকারকে জানাতে বেরিয়েছিলেন। দুর্নীতি, পানীয় জলের সংকট, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে না বহু বছর ধরে। এই দীর্ঘ বঞ্চনার প্রতিবাদেই নেমেছিলেন পথে।
মুহূর্তে শান্তি থেকে রক্তঝরা
কিন্তু মিছিলের মাঝেই আচমকা বদলে যায় চিত্র। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, গুলি হাতে কিছু যুবক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, পাক সেনা এবং আইএসআই-সমর্থিত দুষ্কৃতীরাই হঠাৎ আক্রমণ চালায়। মুহূর্তের মধ্যেই শান্তিপূর্ণ পথে গুলির শব্দ বেজে ওঠে। ঘটনাস্থলেই দু’জন প্রাণ হারান, গুরুতর আহত হন আরও 22 জন।
ক্ষোভের শেকড় ৭০ বছরের পুরোনো
এই বিক্ষোভ শুধুমাত্র একটি ঘটনার প্রতিক্রিয়া নয়। এর শিকড় বহু দশকের অবহেলায়। নীলম ভ্যালি পাবলিক অ্যাকশন কমিটির মুখপাত্র শওকত নওয়াজ মির স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন— “৭০ বছর ধরে আমাদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। ধৈর্যের বাঁধ আর নেই।” তিনি 38 দফা দাবি সামনে এনেছেন। তার মধ্যে পরিকাঠামো উন্নয়ন, দুর্নীতি রোধ, পরিষ্কার পানীয় জলের ব্যবস্থা থেকে শুরু করে পাকিস্তানে বসবাসকারী কাশ্মীরি শরণার্থীদের জন্য দেওয়া সংরক্ষিত 12টি আসন বাতিল করারও দাবি রয়েছে।
সেনা ও সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
পরিস্থিতি সামাল দিতে ইসলামাবাদ থেকে অতিরিক্ত সেনা নামানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। বিরোধী নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন— সাধারণ মানুষের ন্যায্য দাবিকে দমন করতে গিয়ে সরকার নিজের ভীত আরও নড়বড়ে করে তুলছে।
ভারতও নজরে রাখছে পরিস্থিতি
ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সম্প্রতি মরক্কো সফরে বলেন, “PoK আমাদের নিজের জমি। কোনও আক্রমণের প্রয়োজন নেই। একদিন সেখানকার মানুষ নিজেরাই বলবে— আমরা ভারতের অংশ।”
শেষ পর্যন্ত এই আন্দোলন কতদূর গড়াবে, মানুষের ক্ষোভ কীভাবে বিস্ফোরিত হবে— সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। পাক সেনার গুলি ও দমননীতির পর হতাশ জনতার দাবির স্রোত আরও প্রবল হয়ে উঠছে। পরিস্থিতি কোন দিকে গড়াবে সে দিকেই তাকিয়ে সমগ্র অঞ্চল।