রেলযাত্রায় কখনও এমন ভয়ঙ্কর দৃশ্য কল্পনাও করা যায় না। কিন্তু ঠিক এমনই এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল মুম্বইতে (Mumbai)। শৌচালয়ের ডাস্টবিনে মিলল এক শিশুর দেহ। শনিবার কুশিনগর এক্সপ্রেস পরিষ্কার করতে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখে হতভম্ব হয়ে পড়েন সাফাইকর্মীরা। সঙ্গে সঙ্গে খবর যায় রেল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় থানায়। মুহূর্তেই গোটা ঘটনাটা স্টেশনজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার ফলে সৃষ্টি হয়ে তীব্র চাঞ্চল্য।
ঘটনাটি ঘটে কুরলার লোকমান্য তিলক টার্মিনাসে। শনিবার সকালে কুশিনগর এক্সপ্রেস (ট্রেন নাম্বার ২২৫৩৭)-এর এক এসি কামরা পরিষ্কার করছিলেন সাফাইকর্মীরা। নিয়মিত কাজের মধ্যেই আচমকা যখন শৌচালয়ের ডাস্টবিন খোলা হয়, তখনই সামনে আসে এক ভয়ঙ্কর দৃশ্য। সেখানে গুটিসুটি মেরে রাখা ছিল একটি শিশুর মরদেহ। সঙ্গে সঙ্গে রেল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ একাধিক দিক খতিয়ে দেখছে। ট্রেনের প্রতিটি স্টপেজে লাগানো সিসিটিভি ফুটেজও পরীক্ষা করা হচ্ছে।
খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে পাঠানো হয় ময়নাতদন্তে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, মৃত শিশুটির মা শুক্রবার রাতেই গুজরাটের সুরাট থানায় তাঁর তুতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। সেই অভিযোগে বলা হয়েছিল, তাঁর সন্তানকে ২৫ বছরের বিকাশ সাহ অপহরণ করেছে। ঠিক এর পরের দিনই কুশিনগর এক্সপ্রেসে মিলল সেই শিশুর দেহ। ফলে তদন্তে নতুন মোড় তৈরি হয়েছে।
কুশিনগর এক্সপ্রেস নিয়মিত মুম্বই থেকে উত্তরপ্রদেশের গোরখপুর পর্যন্ত যাতায়াত করে। পুলিশের ধারণা, পথে কোথাও পরিকল্পনা করেই শিশুটিকে হত্যা করে লাশ গোপন করার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রতিটি স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। কে বা কারা এর পেছনে রয়েছে, এবং কী ভাবে ট্রেনের মতো জনবহুল পরিবহনে এমন অপরাধ সংঘটিত হলো, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ট্রেনের মতো ভিড় জায়গায় এভাবে শিশু হত্যা নাড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসনকে। বারবার এমন নির্মম মৃত্যুর ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে শিশুদের জন্য সমাজ কতটা সংবেদনশীল? রেলযাত্রীদের নিরাপত্তা ও নজরদারির প্রশ্নে বড় ফাঁকফোকর প্রকাশ্যে চলে এল। সাধারণ মানুষ বলছেন, শুধু প্রযুক্তি নয়, মানবিক দায়িত্ববোধও জাগ্রত করার প্রয়োজন আছে এইসময়ে।