বাংলার আকাশে মৌসুমি বায়ুর (Monsoon) পালাবদলের দৃশ্য এখন স্পষ্ট। দক্ষিণে আর্দ্রতা ধীরে ধীরে সরে গিয়ে জায়গা নিচ্ছে শীতল উত্তর-পশ্চিমা হাওয়া, আবার উত্তরের দৃশ্য অন্য। সেখানে পাহাড়ের ঢালে পড়ছে ঝিরঝিরে বর্ষার শেষ বৃষ্টি। তাই মৌসুমী বায়ু বিদায় নিলেও পশ্চিমী ঝঞ্ঝা রাজ্যের দুই প্রান্তে আলাদা আবহাওয়া তৈরি করেছে। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক।
দক্ষিণবঙ্গ: মেঘে-বৃষ্টিতে ঠান্ডার ছোঁয়া
দক্ষিণবঙ্গে সপ্তাহের শুরুতে আবহাওয়ার মিশ্র চমক হতে পারে। সকালে আকাশে কিছুটা মেঘ দেখা গেলেও দিনের মধ্যে মাঝেমাঝে বৃষ্টি নামার সম্ভাবনাই বেশি থাকছে, বিশেষত ঝাড়গ্রাম, পূর্ব-পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দুই ২৪ পরগনায়। তবে কলকাতা, হাওড়া ও হুগলির অবস্থান একে বারেই উল্টো। এখানে সূর্যের প্রভাবই দেখা যাবে বেশি, সঙ্গে বইবে শুষ্ক ঠান্ডা হাওয়া। তাই সকাল-সন্ধ্যায় হালকা কাঁপুনি বাড়িয়ে দিতে পারে জ্বর থেকে সর্দি-কাশির ঝুঁকি।
উত্তরবঙ্গ: বর্ষার পরের শেষ বৃষ্টির ছোঁয়া
অবশ্য উত্তরবঙ্গে ছবিটা ভিন্ন হলেও প্রেক্ষাপট এক। হিমালয়ের পাদদেশে দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও জলপাইগুড়িতে বৃষ্টির তেমন ভয়াবহ প্রভাব দেখা না গেলেও একদম অতি সামান্য বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। এটি মূলত পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাব, যা বর্ষার শেষ অধ্যায়কে আরও স্নিগ্ধ করে তুলেছে।
সামনে কী অপেক্ষা করছে
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস বলছে, বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণাবর্ত ও দক্ষিণ বাংলাদেশের নিম্নচাপ এখনও সক্রিয়। এর প্রভাবে মঙ্গলবারের পর থেকে ভিজতে পারে পশ্চিমাঞ্চলের দেশ কিছু অংশ। বিশেষত বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান ও বীরভূমে নতুন করে বৃষ্টি ফিরতে পারে। তবে সেটি হবে মৌসুমী বায়ুর আনুষ্ঠানিক বিদায়ের আগে শেষ দফার জলবর্ষণ।
এখন বাংলার মানুষ অনুভব করছে এমন এক মৌসুমি সেতুবন্ধন—যেখানে বর্ষার গন্ধ ধীরে ধীরে মিশে যাচ্ছে শীতের হাওয়ায়। আকাশে শুরু হয়ে গেছে নতুন ঋতুর গল্প, আর তার প্রতিটি অধ্যায়ে লুকিয়ে আছে ঠান্ডা সকালের আভাসে।