মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে রাজ্যের মহিলাদের আর্থিক উন্নয়ন এবং মহিলাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সাবলম্বী করে তোলার জন্য লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প কার্যকর করা হয়েছিল। রাজ্য সরকারের তরফে কার্যকরী এই লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের আওতায় সমগ্র রাজ্যের তপশিলি জাতি ও তপশিলি উপজাতিভুক্ত মহিলারা প্রত্যেক মাসে ১ হাজার টাকার অনুদান পেয়ে থাকেন, অন্যদিকে সমগ্র রাজ্যের জেনারেল ক্যাটাগরি ভুক্ত মহিলারা এবং ওবিসি সম্প্রদায় ভুক্ত মহিলারা প্রত্যেক মাসে ৫০০ টাকার অনুদান পেয়ে থাকেন। তবে এবারে বিধানসভা অধিবেশনের লক্ষ্মীর ভান্ডারের আওতায় মুসলিম মহিলারা ১০০০ টাকা অনুদান পাবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলো। এই প্রশ্নের উত্তরে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদের তরফে কি জানানো হয়েছে তা জানতে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী মহিলা তথা সাধারণ জনগণ রীতিমতো উৎসুক হয়ে উঠেছেন। যার জেরে আজকের এই পোস্টে আমরা মুসলিম মহিলারা আগামী দিন এই লক্ষ্মীর ভান্ডারের আওতায় ১ হাজার টাকার অনুদান প্রদানের বিষয় সংক্রান্ত সমস্ত প্রকার তথ্য নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি।
বিগত শুক্রবার বিধানসভা অধিবেশন চলাকালীন প্রশ্নোত্তর পর্বে ডেবরার বিধায়ক হুমায়ুন লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের আওতায় মুসলিম মহিলাদের ১০০০ টাকা করে অনুদান প্রদান করা হবে কিনা তা সম্পর্কে জানতে চেয়ে প্রশ্ন তোলেন। প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালীন প্রতীচী ট্রাস্ট -এর তরফে প্রকাশিত রিপোর্ট তুলে ধরে ডেবরার বিধায়ক হুমায়ুন বলেন যে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসকারী মুসলমান মহিলাদের আর্থিক অবস্থা যথেষ্ট করুণ। তিনি আরো জানিয়েছেন যে, ইতিপূর্বে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে গেলে মুসলমান মহিলারা নিজেদের আর্থিক দুরবস্থার কথা জনপ্রতিনিধিদের জানিয়েছেন এবং তপশিলি জাতি ও তপশিলি উপজাতিভুক্ত মহিলাদের মতই তারাও যাতে ১ হাজার টাকা করে অনুদান পেতে পারেন তা সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিয়ে পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন:- পি এম কিষাণ যোজনার ১৪ তম ইনস্টলমেন্টের টাকা এখনও পাননি? কবে পাবেন জেনে নিন।
তবে ডেবরার বিধায়কের তুলে ধরা তথ্য এবং প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যের শিল্প বাণিজ্য তথা নারী, শিশু ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা জানিয়েছেন যে, ধর্মীয় ভেদাভেদের ভিত্তিতে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের মহিলারা অনুদান পান না। মূলত রাজ্যের মহিলাদের ক্যাটাগরি অনুসারে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের আওতায় ৫০০ টাকা এবং ১ হাজার টাকার অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে। তিনি আরো বলেন যে, মূলত রাজ্যের মহিলাদের আর্থিকভাবে সহায়তা করার জন্য এবং প্রান্তিক মানুষদের সুবিধার্থে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প কার্যকর করা হয়েছিল। যেকোনো রকম রাজনীতি কিংবা ধর্মীয় ভেদাভেদের উর্ধ্বে গিয়ে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের আওতায় সমগ্র রাজ্যের মহিলাদের অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে।
রাজ্যের শিল্প বাণিজ্য তথা নারী, শিশু ও সমাজ কল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজার জবাব শোনার পর হুমায়ুন ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত মুসলমান মহিলাদের লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার স্বপক্ষে অনুরোধ জানান। আর তাতেই তৃণমূলের মন্ত্রী এবং বিধায়কদের নানাবিধ প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় হুমায়ুনকে। যদিও এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তরে হুমায়ুন সাফাই দিয়েছেন যে, রাজ্য সরকারের তরফে কখনোই জাতভিত্তিক সমীক্ষা করা সম্ভব নয়। আর তাই মুসলিম মহিলাদের করুণ দৃশ্য এখনো পর্যন্ত সমগ্র বাংলার কাছে স্পষ্ট নয়। মুসলিম মহিলাদের আর্থিক এবং সামাজিক অবস্থানের কথা তুলে ধরা হচ্ছে। আর তাই তিনি মুসলমান মহিলাদের সাহায্যার্থে প্রতিমাসে ১ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার স্বপক্ষে প্রশ্ন তুলেছিলেন, এমনটাই জানিয়েছেন হুমায়ুন স্বয়ং।