উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং ও ডুয়ার্স এখন ভয়াবহ ধস ও বন্যার দাপটে বিপর্যস্ত। পাহাড় থেকে নেমে আসা কাদা ও জল প্লাবিত করেছে বহু গ্রাম, ভেঙে পড়েছে অনেক সেতু ও রাস্তা। এমন পরিস্থিতিতেই মঙ্গলবার মিরিক পৌঁছান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি ঘোষণা করেন— মিরিকের (Mirik) দুধিয়া এলাকায় আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই তৈরি হবে একটি অস্থায়ী সেতু, যাতে দ্রুত যোগাযোগ স্বাভাবিক করা যায়। পাশাপাশি প্রায় ৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এক বছরের মধ্যে গড়ে তোলা হবে স্থায়ী সেতুও।
তবে প্রশাসনের তরফে প্রথমে জানানো হয়েছিল, অস্থায়ী সেতু নির্মাণে অন্তত এক মাস সময় তাদের দিতে হবে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সরাসরি নির্দেশে সেই সময়সীমা কমানো হয়েছে। তাঁর কথায়, “মানুষের কষ্ট আমরা এক দিনও বরদাস্ত করতে পারি না, তাই ১৫ দিনের মধ্যেই কাজ শেষ করতে হবে।” তিনি আরও জানান, ভেঙে যাওয়া অন্য সেতুগুলিও দ্রুত নতুন করে নির্মাণ করা হবে। মিরিককে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে পুনর্বাসন ও পরিকাঠামো পুনর্গঠনের দিকেও ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, বিপর্যয়ের ফলে যেসব আঞ্চলিক বাসিন্দার পরিচয়পত্র বা সরকারি নথিপত্র নষ্ট হয়েছে, তাদের নতুন পরিচয়পত্র হাতে তুলে দিতে হবে দ্রুত। সেখান থেকেই জেলা প্রশাসনকে এ নির্দেশ দেন তিনি।
সরকারি হিসাবে, এখন পর্যন্ত এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে প্রাণ গেছে ২৩ জনের— যার মধ্যে ১৮ জন মিরিক-কালিম্পং অঞ্চলের ও ৫ জন নাগরাকাটার বাসিন্দা। মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা অর্থসাহায্য ও পরিবারের একজনকে হোমগার্ড হিসেবে চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “টাকা জীবনের বিকল্প নয়, কিন্তু কঠিন সময়ে কাউকে একা না ফেলে রাখা আমাদের কর্তব্যের পরিপন্থী।”
সব মিলিয়ে টানা বৃষ্টিতে দার্জিলিং, কালিম্পং ও নাগরাকাটা সহ একাধিক এলাকায় ধস নেমে ভয়াবহ বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। নদীগুলিতে জল উপচে পড়ায় বহু গ্রাম এখনও বন্যার জলে ডুবে। রবিবার থেকেই পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার হাসিমারা ও নাগরাকাটায় দুর্গতদের সঙ্গে দেখা করে তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।