উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি অঞ্চলে টানা বৃষ্টি ও ভূমিধসে বিপর্যস্ত জনজীবন। তার মাঝেই আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সফরসূচিতে হঠাৎ বড় পরিবর্তন। মিরিক যাওয়ার পরিকল্পনা আজ সকালে বাতিল করে তিনি এখন সোজা সুখিয়াপোখরির পথে। প্রশাসনিক সূত্র বলছে— পরিস্থিতির ভয়াবহতা সরাসরি নিজের চোখে দেখতে ও ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতেই এই সিদ্ধান্ত।
গত রবিবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী পা রেখেছিলেন উত্তরবঙ্গে। প্রথম গন্তব্য আলিপুরদুয়ারের হাসিমারার সুভাষিণী চা-বাগান, সেখানেই জনসংযোগে ভরপুর একটি কর্মসূচি। পরদিন সোমবার সকালেই তিনি পৌঁছে যান নাগরাকাটা অঞ্চলের বন্যা ও ধসপীড়িত এলাকায়। রাতে সেখান থেকে কার্শিয়ং হয়ে আজ সকালে মিরিক যাওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে সেই পরিকল্পনা বদলে পাহাড়ের অন্য কোণে সুখিয়াপোখরির দিকে মোড় ঘুরে যায় তার সফর। তাই আজ কার্শিয়ং থেকেই সকাল হতেই বেরিয়ে পড়েন সুখিয়াপোখরির উদ্দেশ্যে। সেখানে আক্রান্ত মানুষদের হাতে তুলে দেবেন ত্রাণ, সাথে নিহত দশজনের পরিবারকে চাকরির নিয়োগপত্রও তুলে দেবেন।
সুখিয়াপোখরিতে স্থানীয় ত্রাণ শিবিরে পৌঁছে পরিস্থিতি দেখে মুখ্যমন্ত্রী বেরবেন এর পরের গন্তব্য দার্জিলিং-এর উদ্দেশ্যে। সেখানে রিচমন্ড হিলে দুই জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়াও গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) পাহাড়-সংক্রান্ত ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক রিপোর্ট তুলে দেবে তার হাতে। সাম্প্রতিক বৃষ্টি, বন্যা ও ভূমিধসে পাহাড়জুড়ে ক্ষতি প্রায় ৯৫০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে এবারে।
এক সপ্তাহের মধ্যে মমতার দ্বিতীয় উত্তরবঙ্গ সফর শুধু ত্রাণ ও প্রশাসনিক পর্যালোচনা নয়, অনেকের চোখে এটি রাজনৈতিক পরীক্ষার মঞ্চও। নির্বাচনের আগে পাহাড়ে নতুন সমীকরণ তৈরির ইঙ্গিত যেন এই সফরে লুকিয়ে আছে— এমন গুঞ্জন চলছে প্রশাসনিক মহল থেকে রাজনীতির অন্দরে।