মল্লিকপুর অঞ্চলের একটি নামী হাইস্কুলকে ঘিরে সম্প্রতি বড় ধরনের অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি উন্নয়নের দাবি করলেও বাস্তবে অর্থ খরচের হিসেব নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন উঠছে। বিশেষ করে দীর্ঘ চার বছর ধরে স্কুল ফান্ডের অডিট না হওয়ায় সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়েছে।
অভিযোগের সুর
পরিচালনা কমিটির সদস্য ও কয়েকজন শিক্ষক সরাসরি অভিযোগ তুলেছেন, ২০২০ সাল থেকে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ লক্ষ টাকার গরমিল ধরা পড়ছে। উন্নয়নমূলক কাজের নামে যে বিল জমা দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তার সার্থক প্রমাণ স্কুল চত্বরে মেলেনি।
প্রশ্নপত্র ছাপানো থেকে বেঞ্চ-টেবিল বানানো—প্রতিটি খরচেই নাকি অতিরিক্ত অঙ্ক দেখানো হয়েছে।
স্কুল ভবনের রং অথবা রক্ষণাবেক্ষণ—এসব খাতে যে খরচ দেখানো হয়েছে তা বাস্তব থেকে অনেকটাই আলাদা।
এমনকি বিদেশ সফর খরচের মতো রেকর্ডও উঠে এসেছে, যা ক্রমেই সন্দেহ বাড়াচ্ছে।
এক শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “যা ১০ টাকায় হওয়ার, তা হিসেবপত্রে দাঁড়াচ্ছে ১০০ টাকা। জবাব চাইলে বারবার আমাদের চুপ করিয়ে দেওয়া হতো।”
প্রশাসনিক পদক্ষেপ
এই সমস্ত অভিযোগ যখন লাগাতার জমতে থাকায়, পরিচালনা কমিটির সভাপতি শুভাশীষ সাহুও একাধিকবার রসিদ ও খরচের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। কিন্তু সন্তোষজনক উত্তর মেলেনি। অবশেষে অভিযোগ শিক্ষা দফতরের কাছে পৌঁছায়।
প্রাথমিক তদন্তেই গরমিল সামনে আসায় শিক্ষা দফতরের ডিসিপ্লিনারি কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অঞ্জন দাসকে সাময়িক বরখাস্ত করার। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক অবশ্য কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এখন নজর পূর্ণাঙ্গ তদন্তে
সাময়িক পদক্ষেপ নেওয়া হলেও, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এখনও উত্তরহীন। চার বছর ধরে অডিট বন্ধ থাকার সুযোগে ঠিক কত অর্থ ব্যয় হয়েছে, কোথায় খরচ হয়েছে, আর কোন টাকা উধাও হলো—সেসব জানাতে পারবে কেবল পূর্ণাঙ্গ তদন্তই। স্থানীয় মানুষ থেকে শিক্ষকমহল—সকলের অপেক্ষা এখন সেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের দিকে।