কলকাতার ব্যস্ততম প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে বৃহস্পতিবার দুপুরে হঠাৎই ধোঁয়া উঠতে দেখা যায় এক বহুতলের ছাদ থেকে। ব্যস্ত এলাকায় এই দৃশ্য দেখে মুহূর্তে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের অফিস ও কলেজে পড়ুয়া-অধ্যাপকরা রাস্তায় নেমে আসেন। তবে আসল ঘটনা তখনও স্পষ্ট হয়নি।
ধীরে ধীরে জানা যায়, একটি বহুতল গেস্ট হাউসের উপরের তলায় আগুন লেগেছে। দুপুর ১টা নাগাদ প্রথম এই আগুন স্থানীয়দের নজরে আসে। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কেউ জলের পাইপ দিয়ে, কেউ বালতির জল ছিটিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকায় খবর যায় দমকলে। ওই সময় বহু মানুষ ভবন থেকে তড়িঘড়ি বেরিয়ে আসেন।
খবর পেয়ে দমকলের তিনটি ইঞ্জিন দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ফায়ারম্যানরা চেষ্টা চালান আগুন যাতে কোনোমতেই নীচের অংশে নেমে না আসে। কারণ ভবনটিতে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও কয়েকটি অফিস রয়েছে। টানা প্রায় চল্লিশ মিনিটের চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। সৌভাগ্যবশত, কেউ ভেতরে আটকে পড়েননি। প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি বলেও জানিয়েছে দমকল।
আগুনের উৎস নিয়ে শুরু হয়েছে তদন্ত। প্রাথমিকভাবে অনুমান শর্ট সার্কিট থেকেই বিপত্তি হয়েছে। তবে আরেকটি মত বলছে, মেরামত চলা এয়ারকন্ডিশন মেশিন থেকেই আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। যদিও ভবনের এক কর্মীর দাবি, ছাদের যে জায়গায় আগুন লাগে তা সচরাচর ব্যবহৃত হত না।
কলকাতায় সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আগুন লাগার ঘটনাগুলি যেন উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে তুলছে। বেহালার বহুতল, বড়বাজারের হোটেল থেকে শুরু করে নিউ টাউন ও সল্টলেকের কারখানা—একাধিক জায়গায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। বৃহস্পতিবারের ঘটনা প্রাণহানি এড়ালেও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে: বড় শহরে নাগরিক সুরক্ষা কতটা নিশ্চিত?