বৈশাখের শুরুতেই গরমের সূত্রপাত হওয়ার সাথে সাথে গরমের দাপটে সাধারণ মানুষের রীতিমতো হাঁসফাঁস অবস্থা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে আষাঢ়ের সাথে সাথে বঙ্গে বর্ষা আসলেও গরম কিন্তু কোনোভাবেই কমেনি। আর তাতেই বৈশাখ থেকে এখনো পর্যন্ত ফ্রিজ, পাখা, এসির সাহায্যে সাধারণ মানুষকে গরমের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে হয়েছে। কিন্তু ফ্রিজ, এসি, পাখার মত বৈদ্যুতিক সরঞ্জামগুলি চালালেই তো হলো না, এই সমস্ত সরঞ্জামগুলির কারণে যে বিপুল বিদ্যুৎ বিল প্রত্যেক বাড়িতে গিয়ে পৌঁছেছে তা দেখেই মাথায় হাত পড়েছে সাধারণ মানুষের। তীব্র গরমের কারণে পকেটে টান পড়ায় সাধারণ মধ্যবিত্ত নাগরিকদের যথেষ্ট সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। কিন্তু এমন বেশ কিছু পদ্ধতি রয়েছে যেগুলি অনুসরণ করে বিপুল বিদ্যুৎ বিলও কমানো সম্ভব।
বিদ্যুৎ বিল কমানোর জন্য কোন কোন পদ্ধতি অনুসরণ করবেন?
১. প্রয়োজন না হলে লাইট, পাখা, ফ্যান সহ অন্যান্য বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম বন্ধ রাখুন:- অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ফাঁকা ঘরে লাইট জ্বলছে, ফ্যান চলছে কিংবা টিভি চলছে কিন্তু সেগুলি কোনো কাজেই লাগছে না। বিদ্যুৎ বিল কমানোর জন্য অযথা লাইট জ্বালিয়ে রাখা, কোনো কারণ ছাড়াই ফ্যান চালিয়ে রাখা কিংবা অকারণে টিভি চালিয়ে রাখা বন্ধ করুন। প্রয়োজন না হলে মনিটর বন্ধ করে রাখুন। এই সমস্ত বৈদ্যুতিন সরঞ্জামগুলিকে অকারণে চালিয়ে রাখার কারণে বিদ্যুৎ বিল যথেষ্ট বেড়ে যায়। সুতরাং বিদ্যুৎ বিল কমানোর জন্য এই সমস্ত সরঞ্জামগুলিকে প্রয়োজন অনুসারে ব্যবহার করুন এবং প্রয়োজন না হলে এই সমস্ত সরঞ্জামগুলির ব্যবহার বন্ধ রাখুন।
২. বৈদ্যুতিক যন্ত্রাদি কেনার সময় রেটিং দেখে কিনুন:- যখনই কোন বৈদ্যুতিন যন্ত্র কিনবেন তখন অবশ্যই তার স্টার রেটিং দেখে কিনবেন কারণ স্টার রেটিং যত বেশি হবে যন্ত্রটিও তত কম বিদ্যুৎ খরচ করবে। যদিও স্টার রেটিং বেশি হলে দামও খানিকটা বেশি পড়বে, কিন্তু খানিকটা বেশি দাম দিয়ে ফাইভ স্টার রেটিং সহ বৈদ্যুতিক যন্ত্র নিলে তা যেমন টেকসই হবে ঠিক তেমনভাবেই কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করবে।
আরও পড়ুন:– বিস্কুটের ব্যাবসা শুরু করে প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা আয় করুন। বিস্তারিত জানুন।
৩. ওয়্যারিং পরিবর্তন করুন:- বাড়িতে যদি পুরনো দিনের তারের ওয়ারিং থাকে তবে তা যত দ্রুত সম্ভব বদল করুন। অনেক ক্ষেত্রেই বাড়িতে পুরনো আমলের তারের ওয়ারিং থাকলে অকারণে বিদ্যুৎ বিল বাড়তে থাকে, তাই পুরনো দিনের তারের ওয়ারিং পরিবর্তন করে নতুন তারের মাধ্যমে ওয়ারিং করুন। এর ফলে অকারণে বিদ্যুৎ বিল বাড়বে না। এক্ষেত্রে নতুন তার কেনার সময় তারের গুণমানের দিকে বিশেষভাবে নজর দেবেন।
৪. AC র তাপমাত্রা ২৪ থেকে ২৫ এর মধ্যে রাখুন:- অধিকাংশ মানুষই অকারণে এসির তাপমাত্রা কমিয়ে রাখেন। কিন্তু এসির তাপমাত্রা অতিরিক্ত কমিয়ে রাখার কারণে বিদ্যুৎ বিল যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। আপনি চাইলে এসির তাপমাত্রা কমিয়ে বিদ্যুৎ বিল ৫ শতাংশ কমাতে পারবেন। এছাড়াও গ্রীষ্মের শুরুতেই এসি সার্ভিসিং করিয়ে নিন, এছাড়া এসি রুমকে সব সময় এয়ার টাইট রাখুন। এর মাধ্যমেই আপনি বিদ্যুৎ বিলের খরচ অন্ততপক্ষে ৫% পর্যন্ত কমাতে পারবেন।
৫. ফ্রিজের খেয়াল রাখুন:- ফ্রিজের নিচে বা পিছনে থাকা কনডেন্সার কয়েলটি ভ্যাকিউম ক্লিন করুন। এই কয়েলটিতে ময়লা না জমলে যে হারে কারেন্ট খরচ হয়, ময়লা জমলে তার তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি হারে কারেন্ট খরচ হয়। সুতরাং এই কনডেন্সার কয়েলটি পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা করুন। এছাড়াও বারবার ফ্রিজের দরজা খোলা থেকে বিরত থাকুন এতেও বিদ্যুৎ বিলের খরচ যথেষ্ট কমবে।
৭. ইলেকট্রিসিটি না থাকলে সমস্ত বৈদ্যুতিক যন্ত্র প্লাগ থেকে খুলে রাখুন:- ইলেকট্রিসিটি না থাকলে সমস্ত রকম বৈদ্যুতিক যন্ত্র প্লাগ থেকে খুলে রাখুন, না হলে কারেন্ট আসলে এক ঝটকায় সমস্ত যন্ত্রগুলি চালু হয়ে যাবে। আর এই যন্ত্রগুলি চালু হয়ে যাওয়ার কারণে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে বিদ্যুৎ বিল বাড়তে থাকবে। সুতরাং বিদ্যুৎ বিল কমানোর জন্য লোডশেডিং থাকলে সমস্ত রকম বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি প্লাগ থেকে খুলে রাখাই শ্রেয়।