উত্তর ২৪ পরগনার শান্ত হাড়োয়া (Haroa) হঠাৎই তোলপাড়—কারণ প্রতিবেশী হিসেবে পরিচিত এক ইউটিউবার বাবা-ছেলের লাইমলাইটের নেশা শেষমেশ গিয়ে ঠেকেছে অপরাধের অন্ধকার গহ্বরে। অভিযোগ, নাচ-গানের রিল বানানোর অজুহাতে তাঁরা ১৪ বছরের এক কিশোরীকে ফাঁদে ফেলে দিনের পর দিন শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছে। শনিবার গভীর রাতে হাড়োয়া থানার পুলিশ দু’জনকেই গ্রেপ্তার করেছে।
স্থানীয়দের মতে, ওই ইউটিউবার বহুদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় রিল ও ভিডিও বানিয়ে পরিচিতি পেয়েছিলেন। এই সূত্রেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় কিশোরীর। কিছুদিন পরে ‘রিলস শুট’ করার ছলে মেয়েটিকে বাড়িতে ডেকে আনেন তিনি। অভিযোগ, সেখানেই গোপনে ছবি ও ভিডিও তুলে সেগুলি ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে নির্যাতন চালানো হয়।
ঘটনা ফাঁস হতে না হতেই ইউটিউবারের নাবালক ছেলে মেয়েটিকে জোর করে সিঁদুর পরিয়ে নিজের বাড়িতে আটকে রাখে এবং নতুন করে হেনস্তা শুরু করে। পরিবারের দাবি, কিশোরীকে ফেরানোর চেষ্টা করলে তাঁদের হুমকিও দেওয়া হয়। অবশেষে প্রতিবেশীদের সহায়তায় উদ্ধার হয় মেয়েটি, তারপর থানায় অভিযোগ দায়ের হয় ইউটিউবার পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে।
পুলিশ অভিযোগ হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শনিবার রাতে বাবা ও ছেলেকে গ্রেপ্তার করে। রবিবার নাবালক অভিযুক্তকে পাঠানো হয় জুভেনাইল বোর্ডে, আর ইউটিউবারকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
তদন্তকারীদের বক্তব্য, রিল বানানোর আড়ালে কীভাবে এই ধরণের অপরাধের জাল বিস্তৃত হতে পারে, তা নিয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। এই ঘটনায় স্তব্ধ হারোয়াবাসী—যেখানে একদিন শুটিং চলত ‘রিলস’-এর জন্য, আজ সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে ন্যায় ও ন্যায়ের দাবি।