দেশের খুচরো বাজারে এখনো স্বস্তির হাওয়া নেই। GST-র ফলে দাম কমার বদলে অনেক নিত্যপণ্য রয়ে গিয়েছে আগের সেই চড়া দামে, ফলে মধ্যবিত্তের রান্নাঘরের হিসেব আগের মতোই চাপের মধ্যে। দোকানপাটে ঘুরে দেখা যাচ্ছে, দৈনন্দিন রান্নায় ব্যবহার হওয়া পণ্যই যেন সবচেয়ে বেশি চাপ তৈরি করছে ক্রেতার পকেটে। কোথাও কোথাও তো আগের কয়েক মাসের তুলনায় কিছু পণ্যের দাম আরও বেড়েছে।
আটা, চিনি ও ভোজ্য তেলের দামে কোনো বড় পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। চিনিই ধরুন—একসময় যা কেনা পড়তো ৪০ টাকা, তা এখন পৌঁছেছে প্রায় ৫০ টাকায়। রান্নার তেলের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। খোলা সর্ষের তেল কেজি প্রতি ১৬০ টাকার কাছাকাছি, ভালো মানের তেল ধরলে তা ২০০ টাকার গোড়ায়। সয়াবিন ও রাইস ব্র্যান তেল পাওয়া যাচ্ছে প্রায় ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়, আর সূর্যমুখী তেল কেজিপ্রতি প্রায় ১৭০ টাকা দরে।
বিক্রেতাদের দাবি, এই উচ্চ দাম নতুন কিছু নয়। ভোজ্য তেলের জিএসটি আগেই ৫% ছিল, যা অপরিবর্তিত থাকায় এই অংশে কোনও পরিবর্তন হয়নি। উপরন্তু সর্ষের বীজের দামই কেজি প্রতি ৬০ থেকে ৮০ টাকা—যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে তেলের দামে। তাদের আশা, নতুন ফসল বাজারে এলে কিছুটা দাম নামতে পারে।
এই চড়া দর শুধু দেশীয় কারনে নয়, আন্তর্জাতিক বাজারেও সয়াবিন, সূর্যমুখী ও পাম তেলের মূল্য উঠেছে। যদিও জুনে সরকার আমদানি শুল্ক ২০% থেকে কমিয়ে ১০% করেছে, তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। চিনির ক্ষেত্রেও সমস্যা রয়েছে—ভালো মানের চিনির পাইকারি দর বেড়ে হয়েছে ৪৬ টাকা, আর আখের জোগান কমে যাওয়ায় উৎপাদনেও চাপ পড়েছে।
আখের বড় অংশ এখন ইথাইল অ্যালকোহল তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে, যা চিনির উৎপাদন কমিয়ে দিচ্ছে। ফলে জিএসটি-র হার কমলেও, মধ্যবিত্তের বাজারে এখনও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত স্বস্তি।
ফলে, মধ্যবিত্তরা যতই আশা করুক না কেন জিএসটি কমার ফলে বাজারে কিছুটা স্বস্তি আসবে—পরিস্থিতি এখনোও ততটা বদলায়নি। নিত্যপণ্যের চড়া দাম তাই রয়ে গিয়েছে তাদের প্রতিদিনের বড় দুশ্চিন্তা।