রাজ্যের একাধিক জেলায় হঠাৎ বন্যার আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় ফের কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে জলছাড়া নিয়ে তীব্র টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের (DVC) জলছাড়া থেকেই বিরোধের সূত্রপাত—এমনই দাবি নবান্নের।
দুর্গাপূজোর ব্যস্ততার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, ডিভিসি কোনো পূর্ববার্তা না দিয়েই বিপুল পরিমাণ জল ছেড়েছে। তাঁর কথায়, এই আকস্মিক পদক্ষেপে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা বিপদের মুখে পড়েছে। তিনি জানান, মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে মোট ১ লক্ষ ৫০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে, যার ফলেই নদীগুলি এখন ফুলে উঠেছে এবং নিম্নাঞ্চলে জল ঢোকার আশঙ্কা বেড়েছে।
এই পোস্টের পরেই নড়েচড়ে বসে কেন্দ্র। শনিবার অর্থাৎ আজ এই দাবি নাকজ করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সি আর পাতিল জানান রাজ্যের দেওয়া তথ্য “প্রকৃত চিত্র নয়”। তিনি জানান, দামোদর ভ্যালি রেগুলেশন কমিটির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাস্তবে ছাড়া হয়েছে প্রায় অর্ধেকেরও কম, অর্থাৎ মোট ৭০,০০০ কিউসেক জল। মাইথন থেকে ৪২,৫০০ এবং পাঞ্চেত থেকে ২৭,৫০০ কিউসেক জল ছেড়েছে ডিভিসি। সমাজমাধ্যমে সেই তথ্য প্রকাশ করে পাতিল লেখেন, মুখ্যমন্ত্রীর প্রচারিত সংখ্যা বাস্তবের সঙ্গে মেলে না।
তবে রাজ্য সরকারের অভিযোগ, দুর্গাপূজোর সময় এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সংস্থা যদি আগাম জানিয়ে জল ছাড়া পরিকল্পনা করত, তবে বিপদের আশঙ্কা কমানো যেত। সব ধরণের প্রস্তুতি নিতে সুবিধা হতো। মুখ্যমন্ত্রী আরও দাবি করেন, বিজয়া দশমীর দিনও রাজ্যকে সতর্ক না করে ৬৫,০০০ কিউসেক জল ছেড়ে ডিভিসি রাজ্যের মানুষকে চাপে ফেলেছে।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে আসানসোল ও দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে নদীর জল ইতিমধ্যেই বেড়েছে। ফলে ডিভিসির নতুন জলছাড় পরিস্থিতি আরও জটিল করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দামোদর নদের জলস্তর বাড়ায় বর্ধমান, হাওড়া ও হুগলি জেলার নদীতীরবর্তী এলাকায় ইতিমধ্যেই সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন।