মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় সোমবার ফের তৎপর হয়েছে পুলিশ। ভোররাতেই আসানসোল দুর্গাপুর (Durgapur) কমিশনারেটের বিশেষ দল অভিযান চালিয়ে দু’জন সন্দেহভাজনকে আটক করে। এর ফলে মোট গ্রেফতারির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল পাঁচে, যা তদন্তে নতুন মোড় আনতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে ধৃত তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। সেই সূত্রে সোমবার সকালে প্রথমে গ্রেফতার হয় শেখ নাসিরউদ্দিন। বিজড়া গ্রামের তিনপাড়ার বাসিন্দা নাসিরউদ্দিনকে আগেই আটক করেছিল পুলিশ, কিন্তু দীর্ঘ জেরা শেষে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেফতার করা হয়। এরপর দুপুরে ধরা পড়ে আরও এক অভিযুক্ত—শেখ সফিকুল। ঘটনার পর থেকেই আত্মগোপন করে ছিল সে, শেষ পর্যন্ত গোপালমাঠে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাকে পাকড়াও করা হয়।
যে তিনজনকে রবিবার গ্রেফতার করা হয়েছিল, তাঁরা সকলেই বিজড়া গ্রামের ডাঙাপাড়ার বাসিন্দা। সোমবার গ্রেফতার হওয়া দুই অভিযুক্তও একই এলাকার বাসিন্দা। কমিশনারেটের দাবি, সফিকুল এতদিন পলাতক ছিল, তার খোঁজে তল্লাশি চলছিল। রবিবার ধৃতদের ইতিমধ্যেই দশ দিনের পুলিশি হেফাজত দেওয়া হয়েছে। সোমবার ধৃত দু’জনকে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে পেশ করে তাঁদেরও হেফাজতের আবেদন জানাবে পুলিশ। পরিকল্পনা রয়েছে, পাঁচজনকে একসঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার। পাশাপাশি ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণও হতে পারে।
এদিকে, নির্যাতিতার এক সহপাঠীর ভূমিকাও তদন্তে নতুন করে গুরুত্ব পাচ্ছে। কেন কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যেই দোকান থাকলেও তিনি তরুণীকে বাইরে নিয়ে গিয়েছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও তাঁকে আটক করা হয়নি, জেরা চলছে। নির্যাতিতার পরিবারের পক্ষ থেকেও তাঁর বিরুদ্ধে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে।
সব মিলিয়ে ঘটনার পর থেকে দুর্গাপুরের শান্ত পরিবেশ থমকে আছে। পুলিশি অভিযান আর গ্রেফতারির পর তদন্তে গতি ফেরানো হলেও, শহরের বাসিন্দাদের মনে একই প্রশ্ন—এক মেডিক্যাল পড়ুয়ার ওপর এ ধরনের নৃশংস ঘটনা কিভাবে ঘটতে পারে? বর্তমানে সেই উত্তর খুঁজতেই এখন পুলিশের চোখে রয়েছে অভিযুক্তদের প্রতিটি পদক্ষেপে।