শুরু হয়ে গেছে পুজোর দিন গোনার পালা। একদিকে শহর কলকাতা যখন আলোকসজ্জার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, অন্যদিকে তখন উত্তরবঙ্গের পর্যটনকেন্দ্র ডুয়ার্স যেন তার নিজের রঙ খুলে বসেছে। পাহাড়, নদী আর বনভূমির টানে এখানকার হোটেল-রিসর্টগুলিতে ইতিমধ্যেই অর্ধেক কক্ষ ভরে গেছে। ফলে পর্যটকদের একাংশের ধারণা, দেরি করলে এবারে থাকা নিয়েও পড়তে হতে পারে বিপাকে।
তবে আসল চ্যালেঞ্জ অন্য জায়গায়। হোটেল-রিসর্ট ফাঁকা থাকলেও পৌঁছনো সহজ হচ্ছে না। রেলের দীর্ঘ ওয়েটিং লিস্ট ও একের পর এক “রিগ্রেট” বার্তা ভ্রমণপিপাসুদের ভোগাচ্ছে। যারা ঘর বুক করার আগেই ট্রেনের টিকিট খোঁজেন, তাঁদের অনেকেই তাই নিরুপায় হয়ে ঘরে থাকার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। আর এই বিষয়কেই উদ্বেগ হিসাবে দেখছেন ডুয়ার্সের হোটেল ও রিসর্ট মালিকরা।
ব্যবসায়ীদের দাবি: এখনই স্পেশাল ট্রেন
ডুয়ার্স ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট ওয়েলফেয়ার সোসাইটি এবং লাটাগুড়ির রিসর্ট মালিকদের বক্তব্য—বর্তমানে বুকিং প্রায় ৫০ শতাংশ পূর্ণ। পর্যটকের আগ্রহ দেখে তাঁদের বিশ্বাস, গৃহপূরণে আর দেরি হবে না। রেল যত দ্রুত সম্ভব বিশেষ ট্রেন চালু করুক। তাদের মতে এখনই যদি রেল বিশেষ ট্রেন চালায়, পর্যটকের ঢল নামতে আটকাবে না। তাই যতক্ষণ না যাতায়াত নিশ্চিত হচ্ছে, ততক্ষণ বুকিংয়ের গতি আশাজনক থাকলেও একটা অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে।
অফার কী ডুয়ার্সের?
তিস্তা থেকে সংকোশ পর্যন্ত ছড়িয়ে রয়েছে প্রায় তিনশো হোটেল, রিসর্ট ও হোমস্টে। পর্যটকরা চাইলে বেছে নিতে পারেন—
গোরুমারা, চাপরামারি বা জলদাপাড়ার গভীর অরণ্যে বন্যপ্রাণীর টান,
বক্সা, জয়ন্তী বা রাজাভাতখাওয়ার সৌন্দর্যে পাহাড়-জঙ্গলের মিলনরেখা,
অথবা একটু নির্জন খুঁজলে রয়েছে ডামডিং মনেস্ট্রি, বাগরাকোটের লুপ ব্রিজ কিংবা কাঠামবাড়ির বনাঞ্চল।
হাতি কিংবা গণ্ডার দেখার অভিজ্ঞতা হোক, কিংবা নদীর ধারে বসে চায়ের স্বাদ নেওয়া—ডুয়ার্স কখনো দর্শনার্থীদের নিরাশ করে না।
এই পরিস্থিতিতে ডুয়ার্সে পুজোর মরশুম নিঃসন্দেহে জমজমাট হওয়ার ইঙ্গিত মিলছে। হোটেল-রিসর্টগুলি প্রস্তুত, বুকিংও দ্রুত সম্পূর্ণ হওয়ার পথে। এখন পর্যটকের দৃষ্টি কেবল রেলের দিকে—বিশেষ ট্রেনের ঘোষণা কবে আসে। কারণ, বুকিং যতই এগোক না কেন, টিকিট না পেলে ভিড়ের ছবি অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।