সম্প্রতি দিঘায় (Digha) ঘুরতে গেলে একদিকে থাকে সমুদ্রে ঘোরার আনন্দ আর অপরদিকে থাকে অটোওয়ালার ভাড়ার চাপ! বর্তমান সময় এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে গিয়েই পর্যটকদের রক্তচাপ বেড়ে যায়, কারণটা হল সম্পূর্ণ টাকার অঙ্ক। এবার সেই অস্বস্তির ইতি টানতে এগিয়ে এল সরকার—চালু হল একেবারে নতুন ‘যাত্রী সাথী’ অ্যাপ।
দিঘা গেলে ৫ মিনিটের রাইডে ৩০ মিনিটের ভাড়া কেটে গেছে—এমন অভিজ্ঞতা অনেকেই পেয়েছেন। মন্দারমনি বা তাজপুর ঘুরতে গিয়ে “দাদা, এখানে অটো পাব না, ২০০ টাকা দেবেন”–এই ডায়লগ তো প্রায় সবারই শোনা। এবার এই ভাড়া-দৌরাত্ম্যের দিন শেষ!
উদ্বোধনের মুহূর্ত
গণেশ চতুর্থীর দিনে, দিঘার জনসমাগমের মাঝে, জেলার পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য এই পরিষেবার ঘোষণা করেন। তিনি জানালেন—শুধু দিঘাই নয়, পাশের জনপ্রিয় সৈকত তাজপুর ও মন্দারমনিতেও এই সুবিধা পাওয়া যাবে। ফলে পুরো “দিঘা ট্যুরিস্ট সার্কিট”-ই ঢুকে গেল একই পরিষ্কার, স্বচ্ছ ভাড়ার আওতায়।
কী কী সুবিধা থাকবে?
অ্যাপ থেকেই গাড়ি বুকিং, এখন গাড়ি ধরতে আর স্ট্যান্ডে দাঁড়াতে হবে না।
অটো আর ট্যাক্সি, দুটোই পাওয়া যাবে।
ভাড়া ফিক্সড, অতিরিক্ত দাবি নেই।
নিরাপত্তার জন্য অ্যাপটি পুলিশের নজরদারিতে থাকবে।
শুধু ভাড়া নয়, সুরক্ষাও
‘যাত্রী সাথী’ শুধু টাকাবাঁচানো অ্যাপ নয়, এটি পর্যটকদের নিরাপত্তারও সঙ্গী। যাত্রীদের নিরাপদ ভ্রমণের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। এমনকি দিঘার ভেতরে ট্রাফিক ম্যানেজ করতে প্রশাসন পাঁচটি বিশেষ মোটর বাইক মোতায়েন করছে। এতে যেমন জ্যাম কিছুটা কমবে, তেমনই পর্যটকদের যাতায়াতও হবে আরও স্মুথ।
স্থানীয়দের জন্যও সুবিধা
এটা শুধু ট্যুরিস্টদের জন্য নয়; দিঘা ও আশেপাশের বাসিন্দারাও এই অ্যাপ ব্যবহার করে যাতায়াত করতে পারবেন। তাই ‘যাত্রী সাথী’ একদিকে যেমন দর্শনার্থীদের জন্য ভরসা, অন্যদিকে স্থানীয়দেরও নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠতে পারে। ফলে পর্যটক আর লোকাল বাসিন্দা—দু’জনেরই যাতায়াত হবে অনেক বেশি স্বচ্ছন্দ।
সর্বোপরি এবার সমুদ্রতটে সূর্যাস্ত দেখার পর ট্যাক্সি ভাড়ার জন্য চাপা দীর্ঘশ্বাস ফেলা নয়। ঝট করে অ্যাপ খুলেই এক ক্লিক! দিঘায় বেড়াতে এলে সমুদ্রের হাওয়া যেমন ফ্রেশ, তেমনি যাতায়াতও হতে চলেছে ঝকঝকে আর নির্ভেজাল। তাই পর্যটন মৌসুমে এই স্বচ্ছ ভাড়ার ব্যবস্থা দিঘায় ভ্রমণের অভিজ্ঞতাকে আরও আনন্দদায়ক করে তুলবে বলেই আশা করা হচ্ছে।