রাজধানী দিল্লির (Delhi) শরতে এখন নতুন এক বিপদ। বর্ষা শেষ হতে না হতেই ফের দেখা দিয়েছে জনস্বাস্থ্য সংকট। শহরের বিভিন্ন এলাকায় হঠাৎ করে জলবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে চিকিৎসকেরা সতর্ক করছেন— এবার পরিস্থিতি আগের বছরের মতো সামাল দেওয়া সহজ নাও হতে পারে।
শহরের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে নর্দমা উপচে পড়ছে, রাস্তাজুড়ে জমে থাকা নোংরা জলে ভাসছে আবর্জনা। সেখান থেকেই ছড়াচ্ছে কলেরার জীবাণু। সরকারি তথ্য বলছে, দিল্লির অন্তত ১০৪টি ওয়ার্ডে এখন পর্যন্ত ২৪০ জনেরও বেশি মানুষের মধ্যে কলেরার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এই সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। বহু আক্রান্তকে ভর্তি করা হয়েছে আইসোলেশন ওয়ার্ডে, কারও কারও অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এদিকে হাসপাতালগুলোতেও রোগীর ভিড় প্রতিদিনই বাড়ছে। প্রশাসন বলছে, প্রতিদিন নতুন করে ভর্তি হচ্ছেন বহু মানুষ, যাদের প্রায় সবাই কলেরার প্রকট লক্ষণ নিয়ে আসছেন। দেখা দিচ্ছে প্রবল ডায়রিয়া, বমি এবং তীব্র জলশূন্যতা— যা মাত্র কয়েক ঘণ্টায় প্রাণঘাতী হতে পারে বলে চিকিৎসকরা জানান। তারা আরও জানাচ্ছেন, খুব দ্রুত ছড়াচ্ছে এই সংক্রমণ। বিশেষজ্ঞরা, দূষিত জল, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ এবং নর্দমার অচলাবস্থা এবং দুর্বল স্বাস্থ্যবিধিকে এই সংকটের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করছেন।
প্রশাসনও নড়েচড়ে বসেছে। দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন ইতিমধ্যে শহরের জল ও নর্দমার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা শুরু করেছে। চলছে স্যানিটেশন অভিযান। নাগরিকদের সতর্ক থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে— পানীয় জল অবশ্যই ফুটিয়ে বা পিউরিফায়ার ব্যবহার করে পান করতে হবে, রাস্তার খাবার এড়িয়ে চলা উচিত এবং হাত নিয়মিত সাবান ও পরিষ্কার জলে ধোয়া জরুরি।
সব মিলে রাজধানীর স্বাস্থ্যপরিস্থিতি এখন টানটান। চিকিৎসকেরা বলছেন, টানা বৃষ্টিতে নর্দমা ভেসে যাওয়ায় কলেরার পাশাপাশি ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গুর সংক্রমণও বাড়ছে। প্রশাসনের পরামর্শ— সামান্য উপসর্গ দেখা দিলেও যেন দেরি না করে নিকটস্থ হাসপাতালে যাওয়া হয়। তাই দিল্লি এখন একসঙ্গে একাধিক রোগের হুমকির মুখে, আর এই নিয়ন্ত্রণহীন পরিস্থিতি মোকাবিলাই হয়ে উঠেছে শহরের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।