চেন্নাইয়ের আকাশে অশান্তির ছায়া নেমে এসেছে বিজয়ের সাম্প্রতিক কারুর জনসভাকে ঘিরে। একসময় যাকে মানুষ কেবল অভিনেতা বিজয় হিসেবেই চিনত, এখন সেই রাজনীতিক বিজয়ের আবাসনের চারপাশে অস্বাভাবিক কড়াকড়ি নিরাপত্তা জারি করা হয়েছে। কেন এমন সতর্কতা—এই প্রশ্ন ঘুরছে রাজ্যবাসীর মনে।
কঠোর নিরাপত্তায় বিজয়ের বাড়ি
পুলিশ সূত্রের খবর, হঠাৎ বেড়ে যাওয়া জনরোষ এড়াতেই তাঁর চেন্নাইয়ের বাড়িকে কার্যত দুর্গে পরিণত করা হয়েছে। শুধু বিজয় নন, বরং তাঁর দল Tamilaga Vettri Kazhagam–এর কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের জন্যও বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু কী কারণে এমন ক্ষোভ তৈরি হলো, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোচনা শুরু হয়েছে।
জনসমুদ্র আর অব্যবস্থাপনার অভিযোগ
সরকার যে অনুমোদন দিয়েছিল, তা সর্বোচ্চ ১০ হাজার মানুষের সমাবেশের। অথচ বিজয়ের সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রায় পাঁচ গুণ বেশি মানুষ—প্রায় ৫০ হাজার। তাঁর আগমনও দেরি হয়েছিল সাত ঘণ্টার মতো। গরম, ক্লান্তি আর পানীয়-খাবারের অভাবে মানুষ অস্থির হয়ে ওঠে। আর ঠিক তখনই বিজয় মঞ্চে আসতেই তাঁকে একঝলক দেখার জন্য শুরু হয় ভিড়ের হুড়োহুড়ি।
পদপিষ্টের বিভীষিকা
সেই হুড়োহুড়ি মুহূর্তেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় পরিস্থিতি। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন অনেকে, শ্বাসরোধ ও পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারান ৪০ জন। আহত হন আরও শতাধিক। অভিযোগ উঠেছে, মঞ্চ থেকে পরিস্থিতি সামলাতে না পেরে বিজয় প্রথমে বক্তৃতা চালিয়ে যান, পরে জল ছুঁড়ে ভিড় ঠান্ডা করার চেষ্টায় আরও বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।
সহায়তা পৌঁছাতে ব্যর্থতা
অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে দুর্ঘটনাস্থলে অ্যাম্বুল্যান্স পৌঁছাতেই দেরি হয়। অসংখ্য আহতকে সাহায্য করতে না পেরে ক্ষোভ উথলে ওঠে জনতার মধ্যে। আর এ কারণেই এখন বিজয়ের নাম ঘিরে প্রশ্ন তুলেছে সমালোচকরা।
বিজয়ের প্রতিক্রিয়া ও বিতর্ক
অভিনেতা-রাজনীতিক শোকপ্রকাশ করে নিহতদের পরিবারকে ২০ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু অভিযোগ, ভিড়ের মধ্যে হাহাকার চলাকালীন তিনি মঞ্চ ছেড়ে গোপনে বেরিয়ে যান এবং ত্রিচি বিমানবন্দর থেকে প্রাইভেট বিমানে চেন্নাই ফিরে আসেন। সেই সিদ্ধান্তকেই এখন অনেকেই দেখছেন পরিস্থিতি থেকে সরে দাঁড়ানোর চেষ্টা হিসেবে।
ক্ষোভের আগুন ছড়াচ্ছে বাইরে
এই ঘটনাতেই মানুষের ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে। তাই নিরাপত্তার কারণে বিজয়ের বিলাসবহুল আবাসন আজ শক্ত ঘেরাটোপে ঢাকা। জনসভা ঘিরে ঘটে যাওয়া এই বিভীষিকা এখন কেবল রাজনৈতিক মহল নয়, সমগ্র তামিলনাড়ুতে আলোচনার কেন্দ্রে।