কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের মধ্যে নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে অষ্টম বেতন কমিশন নিয়ে। বছরের শুরুতে ঘোষণার পরও এখনও এর কার্যকর কোনো প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। ফলে প্রশ্ন উঠছে, বেতন ও পেনশন বৃদ্ধির সুবিধা পেতে কী কর্মীদের আরও অন্তত দু’তিন বছর অপেক্ষা করতে হবে?
বেতন কমিশনের অতীত অভিজ্ঞতা
পূর্ববর্তী কমিশনের অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, ঘোষণা থেকে বাস্তবায়ন পর্যন্ত সময়সীমা সাধারণত দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। উদাহরণস্বরূপ, ষষ্ঠ বেতন কমিশন ২০০৬ সালে গঠিত হয়ে ২০০৮-এর আগস্টে কার্যকর হয়। যদিও তা ১ জানুয়ারি, ২০০৬ থেকেই প্রযোজ্য করা হয়েছিল, তবু গঠন থেকে চূড়ান্ত বাস্তবায়ন অবধি প্রায় দু’ বছর লেগেছিল। একইভাবে, সপ্তম বেতন কমিশন গঠিত হয়েছিল ২০১৪ সালের শুরুতে, আর তার সুপারিশ কার্যকর হতে সময় লেগেছিল সাড়ে দু’বছরেরও বেশি।
অষ্টম কমিশনের বর্তমান অবস্থা
২০২৫ সালের ১৬ জানুয়ারি সরকারের পক্ষ থেকে অষ্টম বেতন কমিশনের ঘোষণা হয়েছিল। কিন্তু সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্তও কমিশনের টার্মস অব রেফারেন্স কিংবা সদস্যদের নাম প্রকাশিত হয়নি। অর্থাৎ কার্যত কমিশনের মূল কাজই শুরু হয়নি। কর্মচারী সংগঠনগুলি মনে করছে, এই দেরির ফলেই বাস্তব সুবিধা পেতে কর্মীদের আরও দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হতে পারে।
সম্ভাব্য সময়সীমা
বিশ্লেষকদের ধারণা, যদি অদূর ভবিষ্যতে কমিশন কার্যকরভাবে শুরু হয়, তবে রিপোর্ট তৈরি করতে প্রায় দু’বছর সময় লাগতে পারে। এরপর অনুমোদন, সংশোধন ও সরকারি প্রক্রিয়া মিলিয়ে আরও কয়েক মাস লেগে যাবে। সেই হিসাবে বাস্তবায়নের সম্ভাব্য সময়সীমা ২০২৮ সাল। ফলে সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের বেতনবৃদ্ধি ও ভাতার পরিবর্তন কার্যকর হতে আরও অন্তত দু’বছরের বেশি সময় লাগতে পারে।
কর্মীদের উদ্বেগ
প্রত্যাশিত আর্থিক স্বস্তি দেরিতে আসায় কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ যেমন বাড়ছে, তেমনই অনিশ্চয়তাও তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সপ্তম কমিশনের ধরণ যদি এ বারও বজায় থাকে, তবে দেরি প্রায় নিশ্চিত। অর্থাৎ ঘোষণার পরপরই যে সুবিধা মেলে, সেটা অনেকাংশেই কাগজে কলমে সীমিত, বাস্তবে কর্মীদের পকেটে পৌঁছাতে সময় লাগবে আরও তিন বছর পর্যন্ত।