কেন্দ্রীয় সরকার আরও এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিল নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) নিয়ে। আগামী ১০ বছর পর্যন্ত বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আগত ধর্মীয় সংখ্যালঘু শরণার্থীরা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এর ফলে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকা সময়সীমা কার্যত এক দশক বাড়ল।
এই ঘোষণার পরই কলকাতায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বিষয়টিকে “ঐতিহাসিক পদক্ষেপ” বলে বর্ণনা করেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি দাবি করেন, ওপার বাংলার দলিত সমাজের মানুষ এবার প্রকৃত সম্মান পেলেন।
যোগেন মণ্ডল থেকে বর্তমান প্রসঙ্গ
মজুমদার বক্তৃতার মধ্যে তুলে আনেন পাকিস্তানের প্রথম আইনমন্ত্রী যোগেন মণ্ডলের প্রসঙ্গ। দলিত সমাজের ভরসাস্থল হলেও নিপীড়নের শিকার হয়ে তাঁকে ভারতে পালিয়ে আসতে হয়েছিল। এই উদাহরণ ঘিরে মজুমদার বলেন, দীর্ঘ দশক ধরে সীমান্ত পেরিয়ে আসা অসংখ্য মানুষ শোষণ ও অবহেলার মুখোমুখি হয়েছেন, বিশেষত মহিলারা।
বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু ‘সেকুলারিজম’ মন্তব্য
সবচেয়ে বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করেছে সুকান্ত মজুমদারের সেকুলারিজম নিয়ে মন্তব্য। তাঁর কথায়, “সেকুলারিজম, বহুত্ববাদ কিংবা কমিউনিজম—এসব কেবল তখনই টিকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকবেন। সংখ্যালঘু হয়ে গেলে এই আদর্শও হারিয়ে যাবে।”
এই মন্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে প্রতিক্রিয়ার ঝড় উঠেছে। বিরোধীদের মতে, এই বক্তব্য দেশের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তিকে আঘাত করছে। তবে বিজেপি শিবিরে দাবি করা হচ্ছে, এত দিন কেউ ওপার বাংলার দলিত হিন্দু শরণার্থীদের নিয়ে আন্তরিকতা দেখায়নি, একমাত্র মোদী সরকারই তাদের অধিকার সুরক্ষিত করেছে।
আগামী দিনের প্রেক্ষাপট
কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে একদিকে শরণার্থীদের জন্য নতুন আশার দরজা খুলে গেল, অন্যদিকে সুকান্তর বক্তব্য রাজ্য-রাজনীতিতে নতুন জ্বালানি যোগ করেছে। ফলে আসন্ন দিনে সেকুলারিজম বনাম সংখ্যাগরিষ্ঠতার বিতর্ককে ঘিরেই রাজনৈতিক সমীকরণ আরও সরগরম হয়ে উঠবে বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের।