ভারতে টেলিকম খাতে নতুন এক বড় পদক্ষেপ নিল সরকার। বহুদিনের জল্পনার অবসান ঘটিয়ে স্বদেশি প্রযুক্তিতে তৈরি বিএসএনএলের ৪জি স্ট্যাক অবশেষে চালু হয়েছে। দেশের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি এই উদ্যোগ শুধু একটি পরিষেবা উন্নয়ন নয়, বরং অবকাঠামোর শক্তি ও ভবিষ্যৎ যোগাযোগ ব্যবস্থার এক নতুন সম্ভাবনার বার্তা দিচ্ছে। তবে এর পূর্ণ প্রভাব কতটা হবে, তা সময়ই বলে দেবে।
শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আনুষ্ঠানিকভাবে এই ৪জি স্ট্যাক উদ্বোধন করেন। এর সঙ্গে দেশীয় প্রযুক্তিতে গড়া প্রায় ৯৭,৫০০ নতুন মোবাইল টাওয়ারেরও সূচনা হয়। সরকারের দাবি, নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণ সফ্টওয়্যার চালিত এবং ক্লাউড-ভিত্তিক হওয়ায় ভবিষ্যতে ৫জি পরিষেবায় সহজ রূপান্তর সম্ভব হবে। একে তাই ‘ফিউচার রেডি’ প্রযুক্তি হিসেবেই ধরা হচ্ছে।
প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বড় অবদান রেখেছে সিডট (C-DOT), তেজস নেটওয়ার্কস এবং টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস (TCS)। নতুন যে টাওয়ারগুলি চালু হয়েছে, তা ছড়িয়ে আছে ওড়িশা, অন্ধ্র প্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, আসাম, গুজরাট ও বিহারে। সরকারি মহলের ধারণা, এর ফলে সীমান্তবর্তী অঞ্চল ও প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও দ্রুতগতির ইন্টারনেট পৌঁছবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ইঙ্গিত দেন, এই প্রযুক্তি শুধু সাধারণ মানুষকেই যুক্ত করবে না, বিএসএনএলের উন্নত নেটওয়ার্ক সীমান্ত অঞ্চলে সেনাবাহিনীর কাজেও সহায়ক হবে। বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, দেশীয় সমাধানভিত্তিক এই উদ্যোগ প্রযুক্তিগত স্বনির্ভরতার পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও কৌশলগত শক্তিও বাড়াবে। বিদেশি নির্ভরতা কমে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ লক্ষ্যের দিকে এগোনো সহজ হবে।
তবে চ্যালেঞ্জও কম নয়। বেসরকারি টেলিকম সংস্থাগুলি ইতিমধ্যেই প্রতিযোগিতায় অনেক এগিয়ে। তাই প্রশ্ন উঠছে, বিএসএনএল কতটা দ্রুত এই স্বদেশি প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে পরিষেবার মান উন্নত করতে পারে। নতুন সাফল্যের সূচনা হয়েছে বটে, কিন্তু গ্রাহকদের আস্থা ফেরাতে হলে এই পদক্ষেপকে বাস্তবিক কার্যকর প্রমাণ করাই এখন সবচেয়ে বড় পরীক্ষা।