রাজনীতির মাঠে বড় দাও মারতে আবারও উদ্যোগী হচ্ছে নবান্ন। ডিসেম্বর থেকে এমন এক প্রকল্পের দ্বিতীয় দফা শুরু হতে চলেছে, যা ইতিমধ্যেই হাজার হাজার মানুষকে সরাসরি ছুঁয়েছে। ভোটের আগে এই ঘোষণা যে শাসকদলের জন্য বড় হাতিয়ার হবে, তা নিয়ে সংশয় নেই রাজনৈতিক অন্দরে।
ইতিমধ্যেই রাজ্যে প্রায় ১২ লক্ষ পরিবার অর্থ সাহায্য পেয়েছে সরকারের বিশেষ উদ্যোগে। এর নাম—‘বাংলার বাড়ি’। মূলত দরিদ্র ও গৃহহীন মানুষকে মাথার উপরে ছাদ দেওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এই প্রকল্প শুরু হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বলেছিলেন, “কেন্দ্র সাহায্য না দিলেও আমরা থামব না।” এবার সেই প্রতিশ্রুতির পথেই আরও ১৬ লক্ষ পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অর্থাৎ মোট ২৮ লক্ষ পরিবারকে এবার ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে এই আর্থিক সহায়তা।
রাজ্য সরকারের ক্ষোভ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার জন্য কেন্দ্র বরাদ্দ আটকে রেখেছে বছরের পর বছর। অসংখ্য চিঠি, প্রতিবাদ, সংবাদমাধ্যমে অভিযোগ—কিছুতেই কোনও উত্তর মেলেনি। বাধ্য হয়েই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, নিজের কোষাগার থেকেই বাংলার বাড়ি প্রকল্প চালু করা হবে। প্রতিটি উপযুক্ত পরিবারকে দেওয়া হচ্ছে মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা, দুটি কিস্তিতে—প্রথমে ৬০ হাজার, পরে আরেক ৬০ হাজার।
তবে এই টাকা সবার জন্য নয়। আগে থেকেই যাদের পাকা বাড়ি রয়েছে, কিংবা যাদের স্থায়ী চাকরি-বাণিজ্য বা মাসিক আয় ১৫ হাজারের বেশি, তারা সুবিধাভোগীদের তালিকায় আসবেন না। আয়কর ও পেশাগত কর প্রদানকারীরাও থাকবেন প্রকল্পের বাইরে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভোটের আগে এই ঘোষণা নিছক প্রশাসনিক পদক্ষেপ নয়, বরং ভোট কৌশলের অন্যতম বড় দাও। সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছানো অর্থ সাহায্য রাজনীতির ময়দানে শাসক দলের জন্য হতে পারে নির্ণায়ক স্রোত ঘোরানোর হাতিয়ার।