রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে আবেদন করতে গেলে নাগরিকরা একটি সমস্যায় বারবার পড়েন—জমির ‘পরচা’ বা রেকর্ড-অফ-রাইটস (ROR)। প্রকল্পের আবেদন ফর্ম থেকে শুরু করে বীমার নথি—সব কিছু প্রস্তুত, কিন্তু এই একটি কাগজের অভাবে অনেকের কাজ মাঝপথে থেমে যায়।ভোরবেলা ব্লকের অফিসে পৌঁছে লম্বা লাইনে দাঁড়ানো, সময় নষ্ট, কাগজপত্র ঘাঁটার ধীরগতি কাজ—সবই ছিল একসময় অভ্যাসের অংশ।
কিন্তু এখন সময় পাল্টেছে। সরকারি দফতরের জটিলতা এড়িয়ে এখন ঘরে বসেই পাওয়া যাচ্ছে সেই প্রয়োজনীয় পরচা। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের ডিজিটাল উদ্যোগ ‘Banglarbhumi’ পোর্টাল সেই পথ খুলে দিয়েছে। তবে প্রক্রিয়াটি জটিল নয়।
একজন আবেদনকারীকে যা করতে হবে তা খুবই সহজ:
প্রথমে Banglarbhumi ওয়েবসাইটে গিয়ে Citizen Services → ROR Request সিলেক্ট করতে হবে।
এরপর জেলা, ব্লক, মৌজা, খতিয়ান নম্বর, নিজের নাম ও পরিচয় সংক্রান্ত তথ্য দিতে হবে।
মাত্র কয়েকটি ইনপুটের পরই সিস্টেম বুঝে যাবে কোন জমির নথি চাওয়া হচ্ছে।
কত খরচ পড়বে?
সরকার ফি প্রায় নামমাত্র রেখেছে—
আবেদন ফি ₹১০
প্রতি পাতার জন্য ₹১০
অর্থাৎ, মোট খরচ নাগরিকদের নাগালের মধ্যেই। টাকা মেটানোও ঝামেলাহীন—UPI বা SBI ePay ব্যবহার করলেই হয়ে যাচ্ছে।
হাতে আসবে বিশেষ নম্বর
পেমেন্ট সম্পন্ন হলে সঙ্গেসঙ্গেই পাওয়া যায় দুটি গুরুত্বপূর্ণ নম্বর—
GRN (Government Reference Number)
Application ID
এই নম্বর দিয়েই অনলাইনে ট্র্যাক করা যাবে আবেদন কোন স্তরে আছে। কয়েক ঘণ্টা, দিন বা দু-এক মাসও সময় লাগতে পারে ফাইল তৈরি হতে।
ডাউনলোড হলেই স্বস্তি
স্ট্যাটাস একবার “Ready” দেখালেই নাগরিক সরাসরি PDF ফরম্যাটে নথি ডাউনলোড করতে পারবেন। সেই পরচাটি বৈধ সরকারি নথি হিসেবেই গণ্য হবে।
নাগরিকদের বক্তব্য, এই পরিষেবা কার্যকর হওয়ার ফলে সরকারি দপ্তরের ভিড় যেমন কমেছে। পরচা ডাউনলোডের প্রক্রিয়া যে পুরোপুরি অনলাইন হয়েছে, সেটি শুধু সময় সাশ্রয় নয়, স্বচ্ছতাও বাড়িয়েছে বলে প্রশাসনের দাবি।
সরকারি সূত্রের পক্ষ থেকে ইঙ্গিত মিলেছে, পরচা ছাড়াও ধাপে ধাপে অন্যান্য নথিও একইভাবে অনলাইনে সহজলভ্য করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতে হয়তো আরও অনেক ক্ষেত্রে লাইনে দাঁড়ানোর সংস্কৃতি অতীত হয়ে যাবে।