ভারতের ভোটার তালিকায় (Voter List) ফের দেখা মিলল বাংলাদেশি নাগরিকদের নাম। আরও অবাক করার মতো বিষয়, সন্দেহভাজনদের মধ্যে একজন নাকি রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষাতেও অংশ নিয়েছেন! এতেই চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে প্রশাসনিক মহলে। ফরেনার রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস (FRRO) এবার বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে সরাসরি সতর্ক করেছে।
সূত্রের দাবি, সম্প্রতি এফআরআরও একাধিক চিঠি পাঠিয়ে ১২ জন সন্দেহভাজন বাংলাদেশি নাগরিকের তথ্য কমিশনের হাতে তুলে দিয়েছে। অভিযোগ, এঁরা সকলেই বাংলাদেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করে ভারতে প্রবেশ করেন এবং পরে জাল নথিপত্র তৈরি করে নিজেদের ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দেন।
এই তালিকার সবচেয়ে আলোচিত নাম স্বরূপ সরকার। অভিযোগ, কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ থেকে আসার পর নদিয়ার তেহট্টে আত্মীয়ের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন তিনি। এরপর কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজ থেকে স্নাতক ও রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। শুধু পড়াশোনাই নয়, সম্প্রতি ৭ সেপ্টেম্বর এসএসসি-র নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষাতেও অংশ নেন তিনি।
এফআরআরও-র দাবি, মুর্শিদাবাদের জলঙ্গির এক ব্যক্তি স্বরূপের জন্য ভুয়ো ভোটার কার্ড জোগাড় করতে সাহায্য করেন। সেই নথি বাতিলের সুপারিশও ইতিমধ্যে পাঠানো হয়েছে। এমনই অন্তত আরও ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিকের নাম এবং বিস্তারিত তথ্য—যাদের কেউ নিজেদের উত্তর দিনাজপুর, কেউ নদিয়া, কেউ বা উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা বলে পরিচয় দিয়েছেন—এসব নির্বাচন কমিশনের হাতে পৌঁছেছে।
নির্বাচন কমিশনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়েছে। সন্দেহভাজনদের নাম দ্রুত ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে। তবে যে ব্যক্তি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বসেছেন, তাঁর বিষয়ে এখনও আলাদা আইনি পর্যালোচনা চলছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনার জেরে শুধু ভোটার তালিকা নয়, রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও নতুন জটিলতা জন্ম নিতে পারে। ইতিমধ্যেই নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে একাধিক মামলা জর্জরিত এসএসসি—এবার ‘বাংলাদেশি আবেদনকারী’ বিতর্কে প্রতিষ্ঠানটি আরও বড় বিপদে পড়তে পারে বলেই ধারণা বিশেষজ্ঞদের।