রবীন্দ্রসঙ্গীতের পরিমণ্ডলে এক গভীর শূন্যতা নেমে এসেছে। দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী থাকার পর রবিবার প্রয়াত হলেন বহুল শ্রদ্ধেয় শিল্পী অভিরূপ গুহঠাকুরতা (Abhirup Guha Thakurta)। সম্প্রতি ৭৫ বছরে পদার্পণ করেছিলেন তিনি।
রবিবার সন্ধ্যার পর থেকে রবীন্দ্রসঙ্গীতের পরিমণ্ডল স্তব্ধতায় ভরে উঠেছে। বহু প্রজন্মকে নিজের সুরেলা কণ্ঠে মুগ্ধ করা শিল্পী অভিরূপ গুহঠাকুরতা দীর্ঘদিন শারীরিক অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই শেষে নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুতে এক নিরলস সাধকের অবসান হলো। শুধু কণ্ঠ নয়, এক জীবনব্যাপী সাধনারও সমাপ্তি।
বরিশালে ১৯৪৯ সালে জন্ম নেওয়া অভিরূপের শৈশবেই গানের সঙ্গে প্রথম পরিচয়। রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্রতি তাঁর গভীর অনুরাগ তাঁকে ধীরে ধীরে শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। শিক্ষাজীবনের পর সঙ্গীতে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন খ্যাতনামা গুরুশিল্পীদের কাছে। ১৯৭১ সালে তিনি দক্ষিণী থেকে রবীন্দ্রসঙ্গীতে স্নাতক সম্পন্ন করেন।
মাত্র পাঁচ বছর পর, ১৯৭৬ থেকে অল ইন্ডিয়া রেডিও এবং দূরদর্শনের মঞ্চে নিয়মিত তাঁর গান শোনা যেতে থাকে। সেই সময় থেকেই শ্রোতাদের কাছে তাঁর কণ্ঠ হয়ে ওঠে প্রিয়। দেশের বাইরেও লন্ডন, দুবাই, আবুধাবি, টেক্সাস, সিডনি কিংবা মেলবোর্নের প্রবাসী বাঙালি সমাজে তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীত পৌঁছে দেন গভীর আবেগের সঙ্গে।
তাঁর মৃত্যুতে সংগীত জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সমসাময়িক শিল্পীরা শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেছেন, রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্রতি অভিরূপ গুহঠাকুরতার নিবেদন এক প্রজন্মের জন্য দিশারির ভূমিকা পালন করেছে। তাঁর কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথের গান আজও তরুণদের মধ্যে নতুন করে অনুরাগ জাগিয়ে তুলছে।
রবীন্দ্রসঙ্গীতের ধ্রুপদী ধারায় অভিরূপ গুহঠাকুরতার অবদান ভবিষ্যতেও স্মৃতিচিহ্ন হয়ে রবে। তাঁর প্রয়াণ নিঃসন্দেহে বাংলার সংগীত জগতে অপূরণীয় ক্ষতি।