রাস্তায় সদ্য নামা নতুন বাস। চকচকে লাল-হলুদ রঙে নজর কাড়ছিল সেটি। কিন্তু মঙ্গলবার বিকেলের পর সেই সৌন্দর্য মুহূর্তে পরিণত হল আগুনে ঝলসানো দুঃস্বপ্নে। রাজস্থানের (Rajasthan) জয়সেলমের–যোধপুর মহাসড়কে চলন্ত অবস্থায় হঠাৎ বাসটিতে আগুন ধরে গিয়ে মৃত্যু হয় বহু যাত্রীর।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিকেল তিনটার পর জয়সেলমের থেকে ৫৭ জন যাত্রী নিয়ে যোধপুরের পথে রওনা দিয়েছিল ওই বেসরকারি বাসটি। মাঝপথেই হঠাৎ বাসের পিছন দিক থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। চালক দ্রুত বাস থামান, কিন্তু কয়েক মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে গোটা গাড়িতে। শিখার প্রলয়ে আটকে পড়া যাত্রীদের অনেককেই শেষ পর্যন্ত বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
স্থানীয়রা উদ্ধারকাজে যোগ দিলেও আগুনের তীব্রতায় পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ১৯ জন যাত্রী, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান আরও একজন। অন্তত ১৬ জন গুরুতর দগ্ধ হয়ে রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন।
প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, শর্টসার্কিট থেকেই আগুন লাগে। যে বাসটি মাত্র পাঁচ দিন আগে কেনা হয়েছিল, সেটিই মুহূর্তে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের চিকিৎসায় যাতে কোনও ঘাটতি না থাকে, সে নির্দেশ দেন প্রশাসনকে। বিজেপি বিধায়ক পোকরান পুরীও সাইটে উপস্থিত থেকে উদ্ধারকাজ তদারক করেন।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে।
জয়সেলমেরের এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা শেষ পর্যন্ত এক জটিল প্রশ্ন রেখে গেল—নতুন বাসেও এমন আগুনের সূত্রপাত কীভাবে? কারণ অনুসন্ধানে এখন ব্যস্ত রাজস্থানের প্রশাসন।