শ্রীরামপুরে (Serampur) বর্ষার জল জমে হঠাৎই নতুন এক চিন্তা বাড়িয়েছে প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের মধ্যে। শহরের গলি, রাস্তার গর্ত কিংবা ড্রেনের ধারে হাঁটতে গেলেই এখন ভয়— মাটির নিচে লুকিয়ে থাকা কোনো বিপদের। সম্প্রতি দু’জন বাসিন্দা হঠাৎ জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসকদের প্রাথমিক আশঙ্কা, তাঁরা হয়তো লেপ্টোস্পাইরোসিসে আক্রান্ত হয়েছেন, যা বর্ষার সময়ে নোংরা জলের সংস্পর্শে এলে দ্রুত ছড়াতে পারে।
শহরের চিকিৎসক মহল বলছে, ইঁদুর, ছুঁচো বা বেজির মতো প্রাণীর মল-মূত্রের জীবাণু থেকেই মূলত এই সংক্রমণ ঘটে। জমে থাকা বর্ষার জল সেই বর্জ্য মিশে গেলে সংক্রমণ ছড়াতে সময় লাগে না। টানা বৃষ্টিতে ড্রেন উপচে পড়লে শহরের নানা অংশে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়, আর সেখানেই এই রোগের আশঙ্কা বেড়ে যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, লেপ্টোস্পাইরোসিস শুরুতে সাধারণ জ্বর বা শরীর ব্যথার মতোই দেখায়। কিন্তু অল্প সময়েই এটি লিভার ও কিডনিতে প্রভাব ফেলে শরীরের অবস্থা গুরুতর করে তুলতে পারে। তাই চিকিৎসকেরা পরামর্শ দিয়েছেন— হালকা উপসর্গ দেখা দিলেও চিকিৎসা দেরি না করে দ্রুত হাসপাতালে যেতে।
এদিকে, স্বাস্থ্য দফতর থেকে স্থানীয় প্রশাসনকে ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরুর প্রস্তুতি চলছে। ড্রেন পরিষ্কার, নোংরা জল সরানো এবং রাস্তার গর্ত ঢেকে দেওয়া— এসব নিয়েই এখন তৎপর পুরসভা। একইসঙ্গে নাগরিকদের উদ্দেশে বার্তা দেওয়া হয়েছে, বর্ষায় নোংরা জল এড়িয়ে চলুন, বুট পরে বাইরে বেরোতে অভ্যেস করুন, এবং শরীরে অস্বাভাবিক কিছু টের পেলেই চিকিৎসকের কাছে যান।
ডেঙ্গি- ম্যালেরিয়ার সঙ্গে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর শ্রীরামপুরে এখন নতুন চ্যালেঞ্জ লেপ্টোস্পাইরোসিস। শহরকে সুরক্ষিত রাখতে নাগরিক সচেতনতা আর পরিচ্ছন্নতার উদ্যোগ— এই দুইকেই এখন সবচেয়ে বড় ঢাল হিসাবে দেখছে প্রশাসন।