একটানা কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ধসের ধাক্কা কাটিয়ে উত্তরবঙ্গ (North Bengal) ফের ধীরে ধীরে ছন্দ ফিরে পাচ্ছে। নদীর উপচে পড়া জল এখন অনেকটাই নেমে গেছে, তবে দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়ে দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সর্বাত্মক উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। পুনর্গঠন থেকে শুরু করে ত্রাণ কার্যক্রম— সর্বত্রই চলছে যুদ্ধকালীন তৎপরতা।
দুর্গম এলাকায় চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা
বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর জানিয়েছে, পাহাড়ি দুর্গম অঞ্চল যেমন সুখিয়াপোখরি ও তাবাকোশিতে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে কাজ করছে। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানীয় জল, ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে দুর্গত গ্রামে উদ্ধারকারীরা। পাশাপাশি চলছে একটানা কাদা ও ধ্বংসাবশেষ সরানোর কাজ।
সংক্রমণ রোধ ও ক্ষয়ক্ষতির হিসাব
অন্যদিকে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে ও সংক্রামক রোগ ঠেকাতে জলাশয়, পুকুর এবং মাছের ঘের জীবাণুমুক্ত করার অভিযান ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসন ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও কৃষিজমির ক্ষতির বিস্তারিত তালিকা তৈরি করছে— এই ভিত্তিতে অল্পদিনের মধ্যেই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে।
সেতু ও সড়ক মেরামত
দার্জিলিংয়ের দুধিয়া ব্রিজ এবং এনএইচ-৩১সি-র কালিখোলা সেতুর মেরামতির কাজ দ্রুত চলছে, যাতে যোগাযোগ ব্যবস্থা দ্রুত স্বাভাবিক হয়। তাছাড়াও মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ দিনের মাথায় একটা অস্থায়ী ব্রিজের ব্যবস্থাও করা হবে বলে শোনা যাচ্ছে।
সমন্বিত প্রশাসনিক তৎপরতা
তাছাড়া নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি নজর রাখছেন পরিস্থিতির অগ্রগতির ওপর। প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর সমন্বিতভাবে কাজ করছে যাতে প্রতিটি দুর্গত পরিবারের কাছে দ্রুত সহায়তা পৌঁছায়। বহু অঞ্চলে চালু হয়েছে অস্থায়ী আশ্রয়শিবির ও রান্নাঘর। যাদের বানবাসীর ফলে কাগজপত্র হারিয়েছে, তাঁদের সহায়তায় বসানো হয়েছে বিশেষ শিবির— সেখানে দ্রুত নতুন নথি তৈরির কাজ চলছে।
নির্দেশ ও লক্ষ্য
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, মুখ্যসচিব জেলার আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করে নির্দেশ দিয়েছেন— কোনও পরিবার বা কোনো ব্যক্তি যেন এই সরকারি সাহায্য থেকে বাদ না পড়ে। রাজ্য সরকারের বর্তমান লক্ষ্য পরিষ্কার— দ্রুত পুনর্বাসন, পরিকাঠামোর পুনর্নির্মাণ ও উত্তরবঙ্গের জীবনযাত্রাকে আবার ফিরিয়ে আনা আগের ছন্দে।