দুর্গাপুরে (Durgapur) ফের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠল। শুক্রবার রাতের অন্ধকারে ঘটে গেল এমন এক ঘটনা, যা নিয়ে ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। এক বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীকে রাতের অন্ধকারে অকথ্য নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওড়িশার জলেশ্বরের বাসিন্দা ওই তরুণীর বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি এখন রাজনৈতিক মহল থেকে সাধারণ মানুষের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
শুক্রবার সন্ধ্যায় সহপাঠীর সঙ্গে কলেজ চত্বরের বাইরে ফুচকা খেতে বেরিয়েছিলেন ওই ছাত্রী। তার দাবি, বাজারের কাছাকাছি পৌঁছতেই কিছু যুবক তাঁদের পথ আটকে কটূ মন্তব্য করতে শুরু করে। সেই আতঙ্কে ছাত্রীটির সহপাঠী পালিয়ে যায়। ফলে মেয়েটিকে একা পেয়ে অভিযুক্তরা জোর করে টেনে নিয়ে যায় হাসপাতালের পিছনের নির্জন ঝোপে।এরপর যা ঘটে, তা শারীরিক ও মানসিকভাবে চরম ভয়াবহ ঘটনা। নারকীয় অত্যাচার চালানোর পর অভিযুক্তরা তাঁর মোবাইল ফোনও ছিনিয়ে নেয় বলে জানা গেছে।
রক্তাক্ত অবস্থায় তরুণীটিকে পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাটির পর থেকে ছাত্রীটি গভীর মানসিক অবসাদে ভুগছে। ছাত্রীর পরিবারের তরফে স্পষ্ট দাবি করা হয়েছে—“এই রাজ্যে আমার মেয়ে নিরাপদ নয়, যত শীঘ্রই সম্ভব আমরা মেয়েকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাব।” কলেজ কর্তৃপক্ষও ঘটনার প্রেক্ষিতে থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। তবে এখনও পর্যন্ত কোনো অভিযুক্তের হদিস দিতে পারেনি পুলিশ।
এর জেরে রাজনৈতিক মহলেও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, প্রশাসন বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে ব্যস্ত। অন্যদিকে জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদার জানিয়েছেন, “যত দিন পর্যন্ত অপরাধীদের দ্রুত এবং কড়া শাস্তি না দেওয়া হবে, তত দিন এই ধরনের ঘটনা থামনো সম্ভব নয়।”
দুর্গাপুরবাসীর কাছে ঘটনাটি এখন আতঙ্কের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাতের শহরে নিরাপত্তা ও নারীর মর্যাদা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে, আর এই নৃশংসতার বিচার আদায়ে জনমত ক্রমেই তীব্র হচ্ছে।