পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) গ্রামীণ উন্নয়নে এবার কেন্দ্রের তহবিল থেকে আসছে বড় অঙ্ক—কিন্তু কীভাবে ভাগ হবে, কোথায় খরচ হবে, তা নিয়েই চলছে আলোচনা। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ থেকে আসা এই অর্থ রাজ্যের তিন স্তরের পঞ্চায়েত ব্যবস্থার মাধ্যমে স্থানীয় চাহিদা অনুযায়ী নানা প্রকল্পে ব্যয় করার পরিকল্পনা করেছে প্রশাসন। তবে এখনও সব টাকা হাতে আসেনি, শুরু হয়েছে প্রথম কিস্তি দিয়ে।
৬ অক্টোবর কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রক থেকে রাজ্যে পৌঁছেছে ‘সংযুক্ত (মৌলিক) অনুদান’-এর প্রথম কিস্তি—৬৮০ কোটি ৭১ লক্ষ টাকা। এই অর্থ রাজ্যের ৩ হাজার ২২৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত, ৩৩৫টি পঞ্চায়েত সমিতি এবং ২১টি জেলা পরিষদের মধ্যে ভাগ হয়ে যাবে। মূলত এই খাতের টাকা খরচ হবে এমন প্রকল্পগুলিতে, যা এলাকার মানুষের দৈনন্দিন চাহিদা মেটায়—কখনও রাস্তা মেরামতি, কখনও খেলার মাঠ, আবার কখনও রাস্তার আলো।
গত অর্থবর্ষ ও চলতি অর্থবর্ষ মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ইতিমধ্যেই পেয়েছে ৪ হাজার ১৮১ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে ২ হাজার ৮২ কোটি ১৩ লক্ষ এসেছে ‘সংযুক্ত অনুদান’ বাবদ, আর ২ হাজার ৯৯ কোটি ১০ লক্ষ এসেছে ‘আবদ্ধ অনুদান’ খাত থেকে। পার্থক্য হলো—সংযুক্ত অনুদান খাতে খরচের স্বাধীনতা আছে, কিন্তু আবদ্ধ অনুদান কেবল নির্দিষ্ট কাজেই ব্যয় করা যায়।
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গেছে, এবারের সংযুক্ত অনুদান দিয়ে রাস্তা ও ফুটপাথ নির্মাণ, সৌর ও এলইডি বাতি বসানো, পরিবেশ সংরক্ষণ, উদ্বৃত্ত জমিতে খেলার মাঠ, কর্মসংস্থানমূলক প্রকল্প, ডিজিটাল সুবিধা বৃদ্ধি, এবং শ্মশান রক্ষণাবেক্ষণের মতো কাজে অর্থ যাবে। অন্যদিকে আবদ্ধ অনুদান মূলত শৌচাগার নির্মাণ ও পানীয় জল সরবরাহের জন্য নির্ধারিত, এবং প্রতি বছর সংযুক্ত অনুদানের প্রথম কিস্তি ছাড় হওয়ার পরই সেই খাতের প্রাপ্য অর্থও ছাড় হয়।
প্রশাসন মনে করছে, চলতি অর্থবর্ষেও খুব শীঘ্রই আবদ্ধ অনুদানের প্রথম কিস্তি রাজ্যের হাতে আসবে। অর্থ কমিশনের বরাদ্দ থেকে আসা এই বিপুল তহবিল শেষ পর্যন্ত কোথায়, কতটা বদল আনতে পারে—তার দিকে এখনই নজর সকলের।