রাজ্যজুড়ে নির্বাচনী প্রস্তুতিতে এবার কড়াকড়ি বাড়াচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ECI)। বুধবার এক গুরুত্বপূর্ণ ভার্চুয়াল বৈঠকে জেলার শীর্ষ প্রশাসনিক কর্তাদের দেওয়া হয়েছে মাত্র সাত দিনের সময়সীমা। কমিশনের স্পষ্ট নির্দেশ—তালিকাভুক্ত কাজের প্রতিটি ধাপ ১৫ অক্টোবরের মধ্যে গুটিয়ে ফেলতেই হবে। সময়সীমা অতিক্রম হলে গাফিলতির জন্য কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।
জরুরি প্রস্তুতির চাপ
সভায় জানানো হয়েছে, বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা (SIR) সহ সব ধরনের প্রস্তুতিমূলক কাজের ক্ষেত্রে কোনও বিলম্ব বরদাস্ত করা হবে না। ভোটার তালিকা সংশোধনের ফর্ম ছাপা নিয়েও এসেছে নির্দিষ্ট সময়সূচি—বিজ্ঞপ্তির চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে অন্তত ৩০ শতাংশ ফর্ম প্রস্তুত থাকতে হবে। প্রতিটি জেলা নিজস্ব ছাপাখানা ও পরিকাঠামো কাজে লাগিয়ে স্থানীয়ভাবে এই কাজ করবে, বিহারের মতো কেন্দ্রীয়ভাবে পাঠানোর নিয়ম অনুসরণ হবে না। রাজ্যের প্রতিটি জেলা প্রশাসনের কাছে পৌঁছেছে কমিশনের এই কঠোর বার্তা।
ফর্ম বিতরণের রূপরেখা
এই ফর্মগুলি ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবেন BLO-রা। প্রায় ৭ কোটি ৬৫ লক্ষ ভোটারের জন্য অন্তত ১৫ কোটিরও বেশি আবেদনপত্র ছাপা হবে। প্রতি ভোটারের জন্য থাকবে দুটি কপি—এক কপি ভোটারের কাছেই থাকবে, আরেক কপি তারা সংগ্রহ করে ফিরিয়ে দেবেন প্রশাসনের কাছে।
কমিশনের মতে, এই প্রাথমিক ধাপ শেষ হলেই নির্বাচনী তালিকা সংস্কারের কাজ ত্বরান্বিত হবে। মূল লক্ষ্য, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সবকিছু চূড়ান্ত করে ভোটের আগে কোনো ত্রুটি না থাকে তা নিশ্চিত করা।
বৈঠকের প্রেক্ষাপট
গতকাল রাতেই দিল্লি থেকে কমিশনের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল কলকাতায় এসে আজ এই বৈঠকে যোগ দেন। উপ-নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ ভারতী, আইটি ডিরেক্টর জেনারেল সীমা খান্না, সচিব এসবি যোশী, এবং উপ-সচিব অভিনব আগরওয়াল উপস্থিত ছিলেন। উত্তরবঙ্গের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে সেখানে অধিকাংশ জেলার নির্বাচন আধিকারিকরা অংশ নিতে পারেননি; তাঁদের জন্য মাসের শেষে বিশেষ বৈঠক হবে।
বিহারের উদাহরণে সতর্কতা
জ্ঞানেশ ভারতী বৈঠকে স্পষ্ট করে দিয়েছেন—বিহারের মতো যদি বাংলাতেও দায়িত্বে গাফিলতি ধরা পড়ে, তবে কোনও রেহাই দেওয়া হবে না। কমিশনের হাতে তার স্পষ্ট নজিরও রয়েছে। অর্থাৎ অনিয়ম হলে এবার আর সতর্কবার্তায় থামবে না কমিশন, সরাসরি পদক্ষেপই হবে জবাব। সব মিলিয়ে সময়সীমা খুবই সীমিত আর তার আগে প্রতিটি ধাপ সঠিকভাবে সম্পূর্ণ করাই এখন প্রশাসনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

