সম্প্রতি টানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাঝেই শিলিগুড়ি এবার রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এক সফরের সাক্ষী হতে চলেছে। ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের ক্ষত এখনও শুকায়নি উত্তরবঙ্গে। এর মধ্যেই বুধবার, ৮ অক্টোবর শিলিগুড়িতে আসছেন অমিত শাহ (Amit Shah)—এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন। সরকারি সূত্রে তাঁর কর্মসূচি মূলত প্রশাসনিক হলেও, রাজনৈতিক মহলে জোর আলোচনা—এই সফর হয়তো শুধু আনুষ্ঠানিকতায় থেমে থাকবে না।
সূত্র বলছে, শিলিগুড়ির ব্যাংডুবিতে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন শাহ। তবে এর বাইরে তিনি বিপর্যস্ত অঞ্চলের কিছু অংশে গিয়ে পরিস্থিতি স্বচক্ষে দেখবেন বলে মনে করছে বিজেপি নেতৃত্ব। আরও একটি ইঙ্গিত মিলেছে, শিলিগুড়ির হাসপাতালে ভর্তি আহত সাংসদ খগেন মুর্মুর সঙ্গেও তিনি দেখা করতে পারেন। যদিও কেন্দ্রের তরফে তাঁর ফাইনাল কর্মসূচি এখনও জানানো হয়নি, বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব চাইছে এই সঙ্কটকালে শাহ দুর্গতদের পাশে দাঁড়ান।
কারণ সম্প্রতি প্রবল বৃষ্টি , ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের ফলে উত্তরবঙ্গ ইতিমধ্যেই ২৭টি প্রাণ হারিয়েছে আর হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এমনবস্থায় রাজনৈতিক শিবিরগুলির মধ্যে এখন একটাই বার্তা—বিপদের সময়ে দল-মত ভুলে একসঙ্গে কাজ করা। মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক আনন্দময় বর্মন ও দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তার বক্তব্যও মিলছে—স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর চোখে সরাসরি ক্ষয়ক্ষতি দেখানো জরুরি। বিজেপির উত্তরবঙ্গ কো-অর্ডিনেটর শ্যামচাঁদ ঘোষ তো আরও এগিয়ে গিয়ে বলেছেন, রাজনাথ সিংয়েরও আসা উচিত, যাতে কেন্দ্রীয় সাহায্য বাড়ানো সহজ হয়।
এর মাঝেই ঘটেছে আরেক ঘটনা, যা সফরের গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সোমবার নাগরাকাটা পরিদর্শনে গিয়ে স্থানীয় জনতার রোষের মুখে পড়েন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও বিধায়ক শংকর ঘোষ। ইটের আঘাতে মুর্মুর চোখের নিচের হাড় ভেঙে যায়, এবং বর্তমানে তিনি শিলিগুড়ির এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি। বিজেপি সূত্রে খবর— প্রয়োজনে তাঁকে দিল্লির এইমসে পাঠানোর চিন্তাভাবনাও চলছে।
সব মিলিয়ে, উত্তরবঙ্গের দুর্যোগের প্রেক্ষাপটে অমিত শাহের এই সফর তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছে পর্যবেক্ষক মহল। তাই, রাজনৈতিক আনুষ্ঠানিকতা ও মানবিকতার মেলবন্ধনে এই সফর উত্তরবঙ্গের জন্য এক বিশেষ মুহূর্ত হয়ে উঠতে পারে।