ভারতের শাস্ত্রীয় সংগীত-মহল (Classical Music) হারাল এক উজ্জ্বল নক্ষত্রকে। বৃহস্পতিবার ভোরে প্রয়াত হলেন কিংবদন্তি শিল্পী পণ্ডিত ছন্নুলাল মিশ্র। জীবনের নব্বইয়ের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে তিনি বিদায় নিলেন পৃথিবী থেকে। বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর।
প্রয়াণের মুহূর্ত
পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় আঠারো দিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন পণ্ডিতজি। শেষমেশ বৃহস্পতিবার ভোর চারটের সময় মির্জাপুরে মেয়ের বাড়িতেই চিরনিদ্রায় শায়িত হন এই সংগীত সাধক। দিনটির বিকেলেই বারাণসীতে সম্পন্ন হবে তাঁর শেষকৃত্য।
সুরের সাধক
কেবল শিল্পী নন, তিনি ছিলেন সুরের অনন্ত সাধক। বেনারস ঘরানার প্রবক্তা হিসেবে পুরব অঙ্গ ঠুমরিকে নতুন উচ্চতায় তুলে ধরেন। তাঁর কণ্ঠের জাদু সমানভাবে ছড়িয়ে ছিল খেয়াল, দাদরা, চৈতি, কাজরি কিংবা ভজন—প্রতিটি ধারায়। শৈশবেই বাবার কাছ থেকে সংগীত শিক্ষা শুরু। পরবর্তীতে কিরানা ঘরানার ওস্তাদ আব্দুল গনি খান এবং ঠাকুর জয়দেব সিংহের কাছে গুরুতর্পণ করেন, যা তাঁর শিল্প সাধনায় যুক্ত করে অনন্য মাত্রা।
সম্মান ও স্বীকৃতি
শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক মঞ্চেও ভারতীয় সংগীত ও ঐতিহ্যের মর্যাদা বাড়িয়েছেন তিনি। ২০১০ সালে পদ্মভূষণ এবং ২০২0 সালে পদ্মবিভূষণ—দুটি উচ্চতম নাগরিক সম্মান তাঁর প্রাপ্তির ঝুলিতে সোনার অক্ষরে লেখা। এ ছাড়াও বারাণসীর সাংস্কৃতিক জীবনে তাঁর অবদান বিশেষভাবে স্মরণীয়।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর শোকপ্রকাশ
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই মহীরুহের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি জানান, পণ্ডিত মিশ্র আজীবন ভারতীয় কলা ও সংস্কৃতির সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। উল্লেখযোগ্য, ২০১৪ সালে বারাণসী কেন্দ্র থেকে নির্বাচনের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রস্তাবক হিসেবেও ছিলেন পণ্ডিতজি।
পণ্ডিত ছন্নুলাল মিশ্রের প্রয়াণে ভুবনজোড়া সংগীতজগৎ আজ শূন্যতার মুখোমুখি। তাঁর কণ্ঠে যে সমৃদ্ধ ধারা বিকশিত হয়েছিল, তা আগামী প্রজন্মকে চিরকাল পথ দেখাবে।