দেশজুড়ে টোল ট্যাক্স (Toll Tax) নিয়ে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলেছে। আর সেই সঙ্গে গাড়ি চালকদের মধ্যে শুরু হয়েছে নতুন কৌতূহল—ঠিক কী হতে চলেছে জাতীয় সড়কে? সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহ থেকেই কার্যকর হতে পারে কেন্দ্রের এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত, যা সরাসরি প্রভাব ফেলবে টোল প্লাজায় গাড়ি চালকদের খরচে।
নতুন নির্দেশের ঝলক
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের (NHAI) চণ্ডীগড় আঞ্চলিক দপ্তর থেকে ইতিমধ্যেই একটি নির্দেশিকা জারি হয়েছে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত ওই নির্দেশে সমস্ত প্রকল্প পরিচালকদের জানানো হয়েছে, তারা যেন নিজেদের টোল প্লাজায় নতুন রেট কার্যকর করেন। এতদিন ধরে প্রতি বছর ১ এপ্রিল থেকে টোল পরিবর্তন কার্যকর হতো এবং ২০০৪-০৫ সালের মুদ্রাস্ফীতির হার ধরে হিসাব তৈরি করা হতো।
এবার বদল আসছে হিসাবের ভিত্তিতে
চলতি আর্থিক বছরে এপ্রিল মাসেই টোল রেট গড়ে ৫ থেকে ৭ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল। তবে এবার সরকারের সিদ্ধান্তে সেই ভার লাঘব হতে চলেছে। মূলত টোলের হিসাব করার ভিত্তি বছর পাল্টানো হচ্ছে। যেখানে আগে ২০০৪-০৫ সালের উপর নির্ভর করে টোল রেট ধরা হতো, এবার তার পরিবর্তে ২০১১ সালের মুদ্রাস্ফীতি হারকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।
কেন কমানো হচ্ছে টোল ফি?
অমর উজালার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৪-০৫ সালের ভিত্তিতে টোলের লিঙ্কিং ফ্যাক্টর ধরা হয়েছিল ১.৬৪১। কিন্তু ২০১১-১২ সালের ভিত্তিতে সেই হার নেমে এসেছে ১.৫৬১-এ। এই ফারাকই মূলত টোল ফি হ্রাসের পথ খুলে দিচ্ছে। এর ফলে আগে যে হারে বাড়তি টাকা দিতে হতো, তা কার্যত শূন্যে নেমে আসতে পারে। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে টোল ফি ৭.৫ শতাংশ এবং ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে আরও ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল।
কতটা সাশ্রয় হবে চালকদের?
প্রাথমিক অনুমান বলছে, ছোট গাড়ির টোল গড়ে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কমার সম্ভবনা দেখা দিচ্ছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এখন মোট ১০৮৭টি টোল প্লাজা রয়েছে, যা ১.৫ লক্ষ কিলোমিটার রাস্তাকে কভার করে। এখান থেকে বছরে প্রায় ৬১ হাজার কোটি টাকা আদায় করা হয়। তাই দীর্ঘ দূরত্বের গাড়িচালকদের সাশ্রয় আরও বেশি হবে।
টোল আর রাজস্বের ভারসাম্য
NHAI-এর অভ্যন্তরীণ হিসেব অনুযায়ী, প্রতিদিন প্রায় ১৬৮ কোটি টাকা রাজস্ব আসছে টোল আদায় থেকে। কেবল হরিয়ানাতেই রয়েছে ৫৫টি টোল প্লাজা, যেগুলি থেকে প্রতিদিন গড়ে ৯ কোটি টাকা সংগ্রহ হয়। এর মধ্যে হিসার অঞ্চলের ১০টি টোল প্লাজা থেকে দৈনিক সংগ্রহ দাঁড়ায় ১.৬৮ কোটি টাকা। তবে সরকার মনে করছে, সামান্য টোল হ্রাসে যে স্বস্তি গাড়ি চালকরা পাবেন, তা অর্থনীতির গতিকেও ত্বরান্বিত করবে।